[english_date] | [bangla_day]

মেয়রের উৎসাহ ও দিক-নির্দেশনায় বেড়েছে চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) রাজস্ব বিভাগ গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার ৪৭ শতাংশ পৌরকর আদায় করেছে। এর মধ্যে বেসরকারি হোল্ডিং ৫১ শতাংশ এবং সরকারি হোল্ডিংয়ে আদায় হয়েছে ৪৪ শতাংশ। বেসরকারি হোল্ডিং থেকে রাজস্ব আদায়ে প্রথম হয়েছে রাজস্ব সার্কেল-৫। গত অর্থ বছরে পৌরকরসহ সব খাত থেকে রাজস্ব বিভাগ আয় করেছে ২৭৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৭ টাকা। তার আগের অর্থবছরে আয় হয়েছিল ২৫৩ কোটি ৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৮৬ টাকা।

অর্থাৎ গত বছরে ২৬ কোটি ৫১ লাখ ৭১ হাজার ৮০১ টাকা বেশি আদায় হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, রাজস্ব বিভাগকে তিনি নিয়মিত মনিটরিং করেন। সার্কেল ভিজিট করে কর আদায়ে উৎসাহ দেন। কর আদায়কারীরা যাতে দ্রুত হোল্ডিং মালিকদের কাছে যেতে পারেন সেই লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন থেকে ঋণ দিয়ে তাদেরকে মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার ফাইল তিনি ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছেন। এই ঋণের কিস্তি প্রতি মাসে তাদের বেতন থেকে গ্রহণ করা হবে। যারা কর আদায়ে ভাল পারফরমেন্স করেছেন তাদেরকে পুরষ্কার প্রদানেরও ঘোষণা দেন তিনি।

YouTube player

চসিকের রাজস্ব বিভাগ জানায়, গত অর্থবছরে সরকারি এবং বেসরকারি মিলে চসিকের মোট পৌরকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৩ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ৮৬৩ টাকা। ২০২০ সালের ১ জুলাই হতে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চসিকের মোট ৮টি রাজস্ব সার্কেল পৌরকর আদায় করেছে ১৫৭ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজার ৬০ টাকা ৪৫ পয়সা। এর মধ্যে সরকারি হোল্ডিং থেকে আয় হয়েছে ৭০ কোটি ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪৮ টাকা ২০ পয়সা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪৪ শতাংশ। বেসরকারি হোল্ডিং থেকে আয় হয়েছে ৮৭ কোটি ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ৪১২ টাকা ২৫ পয়সা। সার্কেলসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ বেসরকারি গৃহকর আদায় হয়েছে ৫ নম্বর সার্কেলে।

এই সার্কেলে আদায়ের হার ৭২ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ৬ নম্বর সার্কেল এবং ৩ নম্বর সার্কেল। এই দুই সার্কেলের আদায়ের হার ৬৯ শতাংশ। এর পরে রয়েছে সার্কেল ৪ – এর আদায় ৫৮ শতাংশ। ২ নম্বর সার্কেলে আদায় ৫৬ শতাংশ। ৭ নম্বর সার্কেল আদায় করেছে ৫৪ শতাংশ এবং সার্কেল-১ এর আদায় ৫০ শতাংশ। সর্বনিন্ম ২০ শতাংশ আদায় করেছে সার্কেল-৮। এছাড়া সরকারি পৌরকর আদায়ের ক্ষেত্রে প্রথম হয়েছে তিন নম্বর সার্কেল। এই সার্কেলের আদায় ১৬৯ শতাংশ। দ্বিতীয় হয়েছে ৭ নম্বর সার্কেল। তাদের আদায় ৭৯ শতাংশ। ৫৮ শতাংশ আদায় করে তৃতীয় হয়েছে সার্কেল-২। ৪৫ শতাংশ আদায় করেছে ৮ নম্বর সার্কেল, ৩৯ শতাংশ আদায় করেছে ১ নম্বর সার্কেল, ২৯ শতাংশ আদায় করেছে ৬ নম্বর সার্কেল, ২৪ শতাংশ আদায় করেছে ৪ নম্বর সার্কেল এবং ১৪ শতাংশ আদায় করেছে ৫ নম্বর সার্কেল।

এছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ আদায় করেছে ২৩ কোটি ২০ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৯ টাকা, ভূমি হস্তান্তর কর ৫৬ কোটি ৪৪ লাখ ৭৩ হাজার ২০৬ টাকা, বিজ্ঞাপণ কর ৩৩ লাখ ২৯ হাজার ৬৯ টাকা, সপসাইন ফি ৫ কোটি ৮১ লাখ ৭১৩৮ টাকা, বিনোদন কর ২৩ হাজার ৪৫৬ টাকা, যান্ত্রিক যানবাহন ফি ১৫ লাখ ৮১ হাজার ১০ টাকা, অযান্ত্রিক যানবাহন ফি এক লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা, বিবিধ আয় ২৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬১৬ টাকা, এস্টেট ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ২৮ হাজার ৯৬২ টাকা।

জানতে চাইলে চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, অর্থবছরের শেষের দিকে রাজস্ব আদায়ে ক্রাস প্রোগ্রাম চালানো হয়েছে। তাতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। ভবিষ্যতে আদায়ের হার আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে তারা কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে রাজস্ব সার্কেল-৫ এর কর কর্মকর্তা এ কে এম সালাউদ্দিন বলেন, বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পর রাজস্ব আদায়ের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। হোল্ডিং মালিকদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে নয়, তাদেরকে বুঝিয়ে কর আদায় করতে হবে। মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। মানুষ স্বেচ্ছায় কর প্রদান করেছে। তিনি এর আগে ৬ নম্বর সার্কেলে ছিলেন উল্লেখ করে বলেন, ওইসময়েও কর আদায়ের ক্ষেত্রে পরপর তিন বার প্রথম হয়েছিলেন। ৫ নম্বর সার্কেলে বদলি হয়ে এসেছেন। এখানেও প্রথম হয়েছেন। ৫ নম্বর সার্কেলও প্রথমবারের মত কর আদায়ে প্রথম হয়েছে।

বর্তমান মেয়র ভাগ্যবান উল্লেখ করে বলেন, তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অনেক পুরানো বকেয়া আদায় হয়েছে। তাছাড়া নতুন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে কাজের স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাছাড়া ৬ নম্বর সার্কেলে যে টিম নিয়ে কাজ করেছি সেই টিম ৫ নম্বর সার্কেলেও পেয়েছি। তাদের সাথে নিয়ে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়