রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: রাঙ্গুনিয়ায় চাঞ্চল্যকর রুবেল সিকদার (৩০) খুনের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। মাদক বিক্রির টাকার ভাগ বাটোয়ারার কারনে মূলত খুন হয় রুবেল। পরিকল্পিত হত্যাকান্ডে জড়িত দুই ব্যক্তি আদালতে খুনের আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
দুইজনের মধ্যে একজন অটোরিক্সা চালক। খুনের ঘটনায় আরো একজন জড়িত থাকার কথা আদালতকে জানিয়েছে এই দুই আসামী। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত একটি অটোরিক্সাও (চট্টগ্রাম –১৪-২১৮২) জব্দ করা হয়েছে। বুধবার (২৬ আগস্ট) সকালে রাঙ্গুনিয়া থানা-পুলিশ সাংবাদিকদের কাছে হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীরা হলেন উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সিপাহীপাড়া এলাকার মো. করিমের ছেলে আবদুল গফুর (২৯) ও একই উপজেলার শিলক ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বহদ্দারপাড়া এলাকার ফরিদ আহমদের ছেলে মো. হোসেন (৩৫)।
খুনের সাথে জড়িত সরফভাটা ইউনিয়নের মো. মোরশেদ নামে আরো এক ব্যক্তি রয়েছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বুধবার (২৬ আগস্ট) সকালে থানা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।এই সময় উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুজিবুর রহমান।
ওসি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, “খুনের পর পরই পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িতদের ধরতে বিশেষ অভিযানে নামেন। ঘটনার প্রায় ১০ দিনের মধ্যে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।
সোমবার (২৪ আগস্ট) খুনের সাথে জড়িত আবদুল গফুর ও পরদিন মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) মোহাম্মদ হোসেন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন।
তাঁরা আদালতকে বলেন, “এক বছর আগে রুবেল সিকদারের সাথে তাঁদের মাদক বিক্রির টাকা নিয়ে বিরোধ হয়। বিরোধের জেরে তাঁকে খুন করার জন্য পরিকল্পনা করে তারা।দীর্ঘদিন ধরে রুবেল সিকদারের গতিবিধি পর্যবেক্ষন করতো আসামীরা। ১৫ আগস্ট ভোরে আবদুল গফুর, মোরশেদ ও হোসেন অটোরিক্সা নিয়ে বাঙালহালিয়া যান।
সেখানে তারা মাদক সেবন করেন এবং একটি মুরগি নিয়ে ফেরার পথে উপজেলার শিলক ইউনিয়নের ফুলতল বাজারে রুবেলকে রাস্তায় দেখতে পায়। অটোরিক্সা থেকে রুবেলকে তাঁরা ডাক দিয়ে বাজারের অদূরে এম শাহ আলম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় গেইটে গিয়ে থামেন।রুবেল অটোরিক্সার সামনে গেলে গফুর ও মোরশেদ গাড়ি থেকে নামেন। নেমেই মোরশেদ কোনো কথা না বলেই বুকে ছুরিকাঘাত করে এবং গফুর তাকে সহযোগিতা করেন।
পরে দ্রুত অটোরিক্সাটি নিয়ে শিলক আমতল দিয়ে বিকল্প সড়ক পথে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাত করার পর কাপড়ে রক্তের দাগ লাগার কারনে লোকজন যাতে বুঝতে না পারে সেজন্য অটোরিক্সার ভিতর একটি মুরগী জবাই করে রাখা হয় এবং তাদের শরীরেও কিছু রক্ত মেখে নেন তারা।”
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মুজিবুর রহমান বলেন, “খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত অটোরিক্সাটি পরে বিক্রি করে দেয়া হয়।তদন্তের পর অটোরিক্সাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত আবদুল গফুরের বিরুদ্ধে মারামারির মামলায় পরোয়ানা রয়েছে। পলাতক অন্যজনের নামেও পুলিশের হামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
১৫ আগস্ট সকালে উপজেলার শিলক ইউনিয়নের রাজাপাড়া গ্রামের সিকদার বাড়ী এলাকার আমিন সিকদারের ছেলে মো রুবেল সিকদারকে একই ইউনিয়নের ফুলতল বাজারের কিছু দূরে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়।