তৌফিক হাসানঃ সম্প্রতি মানুষ পুরাতন মোবাইল/ল্যাপটপ কিনতে ঝুকছে বিক্রয় ডট কম ও ফেইসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের দিকে । আগে আমরা শুনতাম বিক্রেতা হয় অসাধু এবার শুনবো অসাধু ধোকাবাজ ক্রেতার গল্প ।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে এক ধরনের অসাধু ছদ্মবেশী ক্রেতা আছে যারা বিক্রয় ডট কম ও ফেইসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে খুঁজে বেঁচে নেয় প্রায় নতুন ও দামী মোবাইল/ল্যাপটপ । তারা বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে, তারপর পণ্য দেখাতে বলে রাতের বেলা অথবা একেবারে ভোরে । তারা অনেক তাড়াহুড়া দেখায় এবং বলে তাদের ঢাকা যেতে হবে তাই জরুরীভিত্তিতে এই মোবাইল/ল্যাপটপ আজকেই কেনা লাগবে ।টাকা নিয়ে তারা যখন বিক্রেতার সাথে দেখা করে তখনই শুরু হয় তাদের হিপনোটাইজিং গেইম । তারা আসে দুইজন । তারা বিক্রেতার সাথে বিক্রেতার বাসায় দেখা করে না, দেখা করে বাসার নিচে কিংবা কোন রেস্টুরেন্টে । পণ্য চেক করে সব ঠিকঠাক দেখে তখন টাকার লেনদেন হয় । বিক্রেতা ইচ্ছে করেই ২-৩ হাজার টাকা কম দেয় যাতে কিছুক্ষণ সময় ব্যয় হয় অই জায়গায় । তারপর ক্রেতা অনেক কথাবার্তার পর রাজি হয় বরাবর টাকা দিতে । টাকা বিক্রেতা দুই তিনবার গুনবে । সব ঠিকঠাক । তারপর ক্রেতা বিক্রেতাকে রাবার দিবে টাকা যাতে ভাঁজ করে রেধে নিতে পারে । টাকা ভাঁজ করার পর ক্রেতা বিক্রেতা থেকে টাকাটা আবার নিয়ে নিবে এবং বলবে ভাই এই টাকাটা আমার অনেক কষ্টের টাকা, আমাকে আপনি ঠকাবেন না দয়া করে, আমাকে আপনি ভাল জিনিস দিয়েছেন তো ? এরকম বলতে বলতে ও কখন যে সে আপনার টাকার বান্ডেল চেঞ্জ করে ফেলবে আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না । ভাঁজ করা বান্ডেল থাকবে হুবহু একই রকম কিন্তু রহস্য হলো অই ভাঁজে শুধু উপরের টাকাটা ১ হাজার টাকার নোট, ভিতরে বড় সাইজের সব পুরাতন দশ টাকার নোট । বান্ডেলটা এমনভাবে সাজানো আপনি ঠেরই পাবেন না আপনার বান্ডেল পরিবর্তন হয়েছে । আপনাকে ওরা অনেক কৌশলে কথার মধ্যে রাখবে যাতে আপনি অই বান্ডেলটা পুনরায় আবার না গুনেন । তারপর ওরা পণ্য নিয়ে গাড়ীতে ওঠে চলে যাবে । তাওপর থেকেই ওদের মোবাইল বন্ধ, অনেক ট্রেকিং ও চেষ্টা চালানোর পরেও ওদের ধরতে পারবেন না । কারণ ওদের সিম নম্বর থাকবে অন্যজনের নামে রেজিষ্ট্রেশন করা । যাদের বেশিরভাগই কাজের বুয়া, রিক্সাওয়ালা ও ভ্যানচালক এবং ঠিকানা থাকবে অনেক দূরে দূরে । ওদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের পর বুঝা যায় ওরাও জানেনা ওদের নামে কিভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন হলো । এই চক্র আপনার আশেপাশেই আছে । চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় এই অজানা চক্রের বিরুদ্ধে মামলা আছে । এই চক্রের সদস্যরা মূলত চট্টগ্রাম আসে ২-৩ দিনের জন্য, কাজ শেষ করে চলে যায় ওদের নিজ নিজ স্থানে, অনুমান করা হয়েছে ওদের বেশিভাগই ঢাকায় থাকে এবং চট্টগ্রাম আসলে ওরা কদমতলীর বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান নেয় । সুতরাং লেনদেনের সময় অবশ্যই সাথে বিজ্ঞ কাউকে রাখবেন । নিজে সাবধান থাকুন, অন্যকেও জানিয়ে দিন এই চক্রের কৌশল ।