আমি ও ঈশ্বর
শাহীন রেজা
চারদিকে চারটা গজব
আমি মাঝখানে দাঁড়িয়ে পুড়ছি ঈশ্বরে
চৌকাঠ ছুঁয়ে দেয়া আলকাতরাগুলো
নামছে স্বর্গ বেয়ে, আর কি আশ্চর্য
তখনি ছুটে আসে বিলকিস ; আমাদের
পাশের বাড়ির মেয়ে
লাটিম-স্বপ্ন নিয়ে কতোবার ঘুরন্ত আমাকে
ছুড়ে দিয়েছি ওর পায়ে; আহা
সেখানে আলতা নয় এখন রজনীর ক্লেদ
জন্মের সাধ ভুলে বারবার নুয়ে পড়েছি
জন্মের ঢালে
আমি কি কুমড়ো ডানা না’কি সূর্যের ফুল?
জমির চাচা বলতেন, জন্ম তো মৃত্যুর আঁতুড়
চার গজবের মধ্যে দাঁড়িয়ে
হা ঈশ্বর আমি এখনো জন্ম খুঁজি
রোদে নাচছে চোখ, বৃষ্টিতে গলছে মাটি
তৃষ্ণায় ধূসর কারবালা আর কামে জ্বলে
যাচ্ছে বৃন্দাবন
চারটি গজব যেন বাথানের চার সে খিলান
মাঝখানে নূহের নৌকা, আমি ও ঈশ্বর।
২৫.০৪.২০২০
২-
ক্ষমা
যদিও ডাকের বাক্সে ধরেছে জং
কাহিল ক্ষুধায় দুপুরের হরকরা
তবুও তোমায় লিখতে বসেছি আজ
কালির সাথে জলের ফোয়ারা মিশে
ফোঁটা ফোঁটা সব মৃত্যুর কলরব
চাইনা এমন নীলের ঠিকানা আমি
পরিজনহীন একাকি ফেরার রথ
চারিদিকে শুধু বিষাদের ধ্বনি আঁকা
ভেন্টিলেটরে জীবনের বুদবুদ
পেয়ালা পেয়ালা করোনার হেমলক
লিখতে বসেছি না বলা দিনের সব
প্রকৃতির সাথে বিরূপের কথকতা
মানুষের সাথে মানুষের বিদ্বেষ
পারমানবিক ভয়াল লড়াই আর
লোভে ও পাপে পরাজিত মানবতা
পৌঁছে দেবে এই চিঠিখানা সময়ের হরকরা
ঠিকঠাক মতো তোমারই সে ঠিকানায়
সময় পেলে দেখে নিও তুমি প্রভু
ক্ষমাতেই জানি মহত্ব তোমার আঁকা
দিও দিও তুমি তাই দিও ঈশ্বর।।
২২.০৪.২০২০
৩-
নজরুল
দিনের সব চিঠি কী পৌঁছে রাত্রির কাছে
অথচ তাদের ব্যবধান মাত্র একটি গোধূলি।
তুমিই তো সেই ব্যোমকেশ ক্ষ্যাপা
যে নিজেই নিজের সলতে হয়
আগুন জ্বালে
যুক্তিতর্কগপ্পো দিয়ে নয়
তোমাকে বাঁধতে হলে তা একমাত্র মমতায়!
তোমার রাঁধুনি হাতে তৈরি কতো শব্দপায়েস
টকঝাল ঝোলঅম্বল
তুমিইতো সেই সুতো ছেঁড়া ঘুড়ি
উড়ালের সখ্য বুনোচিল ।
২৫.০৫.২০২০