এস এম ওয়াহেদ রনিঃ তরুণ চিকিৎসক ও একজন মানবিক ডাক্তার ডাঃ শেখ সাদী। কর্মরত ছিলেন দোহাজারী ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে। করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবার জন্য ডেডিকেটেড আন্দরকিল্লাহ্ জেনারেল হাসপাতালে ডাক পড়ে তার।প্রেষণে পদায়নের আদেশ পেয়ে গত ১৯ এপ্রিল জেনারেল হাসপাতালে যোগ দেন তিনি।
প্রথম দফায় টানা ৭ দিন মনে প্রানে আন্তরিকভাবে চিকিৎসা ও সেবা দিয়েছেন করোনা রোগীদের। এরপর নিজেই চলে যান কোয়ারেন্টিনে।
নগরীর স্টেশন রোডে অবস্থিত এশিয়ান এসআর হোটেল-এ কোয়ারেন্টিনে থাকাকালীন জ্বর-সহ কিছু উপসর্গ দেখা দেয় এই তরুন চিকিৎসকের।
উপসর্গ দেখা দিলে ৯ মে নমুনা পরীক্ষা করাতে দেন এবং পরদিন ১০ মে রাতে প্রাপ্ত রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে অথচ ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে পরদিনই (১১ মে) পরিবারের কাছে দোহাজারিতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পরিবারে নয়, হাসপাতালের আইসোলেশনেই ঠাঁই হয় ডাঃ শেখ সাদীর।
যে ওয়ার্ডে এতদিন নিজেই রোগীদের সেবা দিয়ে গেছেন সেখানেই করোনা রোগী হয়ে ফিরে আসতে হয় তাকে।
জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে এই চিকিৎসকই প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন। এখনও হাসপাতালের আইসোলেশনেই আছেন তিনি। ঈদও কেটেছে হাসপাতালের বিছানায় রোগী হয়ে।
ডাঃ শেখ সাদীর গ্রামের বাড়ি দোহাজারী। সেখানেই তিনি স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে থাকেন। তার দু’টি শিশু সন্তান রয়েছে। বড় মেয়েটির বয়স অনুমানিক সাড়ে তিন বছর। আর ছোট ছেলেটি সবে মাত্র ৫ মাসের।
হাসপাতালের বিছানা থেকে মোবাইল ফোন ও ভিডিও কলের মাধ্যমে সন্তান ও পরিবারের সাথে কথা হয় তার। বড় মেয়ের একটি-ই প্রশ্ন, “আব্বু তুমি কখন আসবে?”
আসব আসব বলে কোনোরকমে দিন পার করছেন তিনি। এছাড়া যে আর কোন উপায়ও নেই।
১৯ এপ্রিল থেকে টানা একমাসেরও বেশি সময় ধরেই কলিজার টুকরো দুটো থেকে দূরে। সর্বশেষ ঈদের দিনগুলোও কেটেছে আদরের সন্তান ও প্রিয়জনদের সান্নিধ্য ছাড়াই।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে জানা যায়, নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে ডাঃ শেখ সাদী-ই প্রথম আক্রান্ত হন। তার দ্বিতীয় নমুনাটিও পজিটিভ এসেছে। পরীক্ষার জন্য কয়েকদিনের মধ্যে পুনরায় নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
সুস্থ হয়ে ফের করোনাযুদ্ধে নামারর প্রত্যাশায় সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন মানবিক ডাক্তার বলে খ্যাত ডাঃ শেখ সাদী