ভেজাল মধু চেনার নানা উপায় ও বাস্তবতা।
চিটাগাং মেইল ডেক্স :
মধু বরাবরই সকলের কাছে কাছে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় তার প্রাকৃতিক গুনাবলীর কারণে আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফায়দা করছেন অনেকেই! অনলাইনে এখন অনেক রকম মধুর বিজ্ঞাপন হরহামেশা চোখে পড়ে। বিশেষ করে এখন সরিষা ফুলের মৌসুমে হলুদ সরিষা ক্ষেত থেকে মধু আহরণের ছবি দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছেন অনেকেই।
মধু ব্যবসায়ী ও মধু নিয়ে কাজ করা অনেকের সঙ্গেই কথা বলে জানা যায় বাংলাদেশে সরিষা ফুল থেকেই সবচেয়ে বেশি মধু উৎপাদন করা হয়।
এমন কী সীমিত আকারে বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে সরিষা ফুলের মধু।
এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন ফুলের সময় ভিন্ন ভিন্ন ফুলের মধু উৎপন্ন করা হয়ে থাকে। তবে আগ্রহের শীর্ষে বরাবরই সুন্দরবনের মধু।
মধুর প্রকারভেদ: মধু প্রধানত দুই প্রকার-
প্রাকৃতিক আর চাষ করা মধু, যেটাকে চাষের মধু বলা হয়ে থাকে।
প্রাকৃতিক মধু: বাংলাদেশ প্রাকৃতিক মধুর প্রধান উৎস্য সুন্দরবন। মৌয়ালরা সেটা মৌসুমে সংগ্রহ করে ও তা সারা দেশে বাণিজ্যিকভাবে বিপণন হয়ে থাকে। এই সুন্দরবনে অন্তত সাত রকম ফুলের মধু হয়ে থাকে। গোরান, খলিশা ও কেওড়া তাদের অন্যতম।
এর বাইরে আমরা প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে গ্রামে যে মৌমাছির চাক দেখি তা আসলে খুবই সামান্য মধুর যোগান দেয়।
চাষের মধু: বাংলাদেশে চাষ করা মধুর মধ্যে পাঁচ রকম ফুলের মধু বেশি দেখা যায়। সরিষা, লিচু, কালো জিরা ফুলের মধু অন্যতম
মধু চেনার সঠিক উপায়: মধু চেনার সঠিক বা নির্ভেজাল উপায় কি তা নিয়ে নানান বিভ্রান্তি রয়েছে।তবে সবাই একমত যে- মধু চেনার সবচেয়ে ভালো উপায় হল ল্যাব টেস্ট। কিন্তু বাংলাদেশ সেই সুবিধা খুব একটা নেই।
এছাড়া নানান প্রচলিত যে সব উপায়ে অনেকে মধুর গুণাগুণ বিচার করেন, সেটাতে আপত্তি আছে বিশেষজ্ঞদের।
এই যে আগুন দেয়া, পানিতে দেয়া এগুলোর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই- বিশেষজ্ঞদের মতে ।
মধুতে প্রাকৃতিকভাবেই চিনি থাকে আর চিনি থাকলে তো পিঁপড়া খাবেই। আর আগুন ধরার বিষয়টি হল মৌমাছি প্রাকৃতিকভাবে চাকে মোম তৈরি করে, ফলে আগুন তো ধরবেই। ল্যাব টেস্ট ছাড়া তাই উপায় নেই
মধু জমে গেলে খাঁটি না এই ধারণাটা ভ্রান্ত। আর মধু পানিতে মেশে কি মেশে না এটা মধুর ঘনত্বের উপর নির্ভর করে।
সুন্দরবনের মধু সাধারণত জমবে না, ফ্রিজে থাকলেও না – বরং ঘনত্ব বাড়বে। তবে বেশি দিন ফ্রিজে রাখলে মধুর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই মধু যতোটা সম্ভব টাটকা খাওয়াই ভালো। আর ৩-৪ মাস পর সব মধুই লাল বর্ণ ধারণ করে।
এছাড়া খাঁটি মধু পরিশোধন ছাড়া রেখে দিলে উপরে অনেকটা ফেনার মতো একটা স্তর পরে, যা ভেজাল মধুতে হয় না।