[english_date] | [bangla_day]

বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার কী? যা জানা জরুরি

মাহমুদা: বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার (বিপিডি) হচ্ছে এক ধরনের মানসিক স্বাস্থ্যজনিত অসুস্থতা যা একজন মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণের ওপরে তীব্র প্রভাব ফেলতে পারে। লাগামহীন আবেগ মানুষের মাঝে অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করে। অন্যরা কী ভাবছে তা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তার ফলে নেতিবাচক সম্পর্কের সূত্রপাত হয়। তবে, কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি এক্ষেত্রে সমাধান হিসেবে কাজ করে।

লক্ষণসমূহ

বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজর্ডারে ভুক্তভোগীরা প্রচন্ডরকম মুড সুইং এর শিকার হয়। এতে তাদের রুচি, চাহিদা এবং ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে সম্পর্কের অবনতিও ঘটে থাকে। তবে উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হলো-

১. যেকোনো সম্পর্ক এড়িয়ে চলা কিংবা খুব দ্রুত সম্পর্কের ইতি টানা।

২. পরিবার, বন্ধু কিংবা প্রিয়জনের সাথে জটিল কিংবা অস্থিতিশীল সম্পর্কের সূত্রপাত হওয়া।

৩. আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা।

৪. কখনো কখনো আত্মঘাতী কাজ করা যেমন শরীরের কোনো অঙ্গ কেটে ফেলা

৫. দীর্ঘদিন ধরে একাকিত্ব অনুভব করা।

৬. রাগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা।

৭. অন্যদের থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া ইত্যাদি।

কেন এ রোগ হয়?

গবেষণা থেকে জানা যায় যে, বংশগত, পরিবেশগত এবং সামাজিক ক্ষেত্রগুলোই এই সমস্যার জন্য প্রধানত দায়ী। তবে পরিবারে অন্য কারো যদি বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিজর্ডার থেকে থাকে, তাহলে বাকি সদস্যদেরও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। এছাড়া, গবেষণা এটাও বলে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের রাগ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে কার্যরত অংশের গাঠনিক পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। অধিকন্তু, জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো বিশেষ দুর্ঘটনা যা পরবর্তী সময়ে যা মানসিক ট্রমার কারণ হয়, তার ফলাফলস্বরূপ বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিজর্ডার দেখা দিতে পারে।

শনাক্তকরণ উপায়

একজন স্বীকৃত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ যেমন একজন সাইকিয়াট্রিস্ট, সাইকোলজিস্ট অথবা ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্কার বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজর্ডার শনাক্ত করতে পারেন। এক্ষেত্রে, ভুক্তভোগীর আচরণগত মূল্যায়ন, পূর্ব অভিজ্ঞতা অথবা পারিবারিক চিকিৎসা ইতিহাস থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সম্ভাব্য লক্ষণগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

চিকিৎসা পদ্ধতি

কীভাবে এই বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিজর্ডার দূর করা যায় তার ওপরে অনেক গবেষণা রয়েছে। কাউন্সেলিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সাইকোথেরাপি যেমন ডায়ালেক্টিক্যাল বিহ্যাভিয়র থেরাপি (ডিবিটি), কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি ( সিবিটি) এসবের মাধ্যমে চিকিৎসা বেশ কার্যকর। এছাড়াও কখনও কখনও মেডিসিন ও দরকার হয়। সেক্ষেত্রে ওষুধ এবং কাউন্সেলিং একসাথে নিতে হয়। এসবের বাইরেও ভালো পারিবারিক ও সামাজিক সহযোগিতা এখন মানসিক রোগীকে দ্রুত ভালো হয়ে উঠতে সাহায্য করে। তবে এসব লক্ষণসমূহ প্রাথমিকভাবে ম্যানেজ করতে সক্ষম না হলে অবশ্যই একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা, লিভিং উইথ ওয়েলনেস এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়