[english_date] | [bangla_day]

ডায়াবেটিস দূরে রাখবে এই ৫ খাবার

লাইফস্টাইল ডেস্ক: আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন। জীবনযাপনের ব্যস্ততা আমাদের প্রতিদিনের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তার দিকে মনোযোগ দিতে দেয় না। আমরা যে খাবারগুলো গ্রহণ করি তা সাধারণত শুধুমাত্র এক বা দুটি খাদ্য গ্রুপের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে, যা শরীরের সঠিক কার্যকারিতার জন্য যথেষ্ট নয়।

ফাইবার হলো একটি খাদ্যতালিকাগত উপাদান যাতে সেলুলোজ, লিগনিন এবং পেকটিনের মতো পদার্থ থাকে। ফাইবার আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং আমাদের ভালো হজম করতে সাহায্য করে। উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবারে পাওয়া ফাইবার আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। দুই ধরনের ফাইবার আছে; দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় এবং উভয়েরই অনেক সুবিধা রয়েছে। দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সামান্য আঠালো হয়ে যায়, যা কোলেস্টেরলের শোষণ কমাতে সাহায্য করে। যদিও অদ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের কাজে সাহায্য করে।

সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, ফাইবার গ্রহণ করলে তা স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার একটি গ্রুপকে উন্নীত করে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। গবেষণাটি এই সত্যটিকে আরও শক্তিশালী করেছে যে নির্দিষ্ট ধরনের ডায়েটরি ফাইবার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করতে পারে, যা খাবারের ভালো হজম এবং শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কার্যকরী। চলুন জেনে নেওয়া যাক ফাইবার সমৃদ্ধ ৫টি খাবার সম্পর্কে যেগুলো ডায়াবেটিস দূরে রাখতে কাজ করে-

মসুর ডাল

মসুর ডালে ফাইবার এবং প্রোটিন উভয়ই থাকে। এই ডালে মোট কার্বোহাইড্রেটের প্রায় ৪০ শতাংশ ফাইবার, যা রক্তে শর্করার প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার অনুসারে, প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডালে ১৫ গ্রামের বেশি ফাইবার থাকে, সেইসঙ্গে থাকে প্রায় ১৮ গ্রাম প্রোটিন।

তিল

তিল একটি অদ্রবণীয় ফাইবার যা প্রচুর শক্তিতে ভরপুর। নিয়মিত তিল খাওয়ার অভ্যাস হার্টের জটিলতা এবং ডায়াবেটিসের সঙ্গে যুক্ত স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে।

দানা শস্য

গমের রুটি, পাস্তা, বাদামী চাল, ওটস এবং বার্লি হলো ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্যের উৎস, যা আমাদের রক্তে শর্করাকে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে ধীরে ধীরে হজম হয়। এগুলো ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে এবং জটিল কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারকে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত করে তোলে। নিয়মিত দানা শস্য খেলে তা ওজন বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিসের জন্য একটি বড় ঝুঁকির কারণ। এগুলো পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে, ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে।

পেয়ারা

পেয়ারার কম গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে এবং এটি খাদ্যতালিকাগত ফাইবারে ভরা যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য ডায়াবেটিস রোগীদের একটি সাধারণ সমস্যা। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারা আপনার শরীরে সুগার শোষণকে ধীর করতে সাহায্য করে। এটি হালকা নাস্তা হিসেবেও খেতে পারেন।

মেথি

মেথি বীজ এবং মেথি শাক উভয়ই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চমৎকার। এগুলো ফাইবার সমৃদ্ধ যা হজম প্রক্রিয়া ধীর করতে সাহায্য করে, যা শরীরে কার্বোহাইড্রেট এবং শর্করার শোষণ নিয়ন্ত্রণ করে। সেইসঙ্গে এগুলো গ্লুকোজ সহনশীলতা উন্নত করতে এবং আমাদের শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও পরিচিত। সারারাত মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে মেথি পানি পান করুন। এতে উপকার পাবেন।

উপরে উল্লিখিত খাবার ছাড়াও অনেক খাবার আছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো। যেমন পেঁপে, চেরি, তরমুজ, সব ধরনের শাক, টমেটো, কুমড়ার বীজ। সেইসঙ্গে প্রতিদিন কোন না কোন ব্যায়াম করাও গুরুত্বপূর্ণ কারণ শারীরিক কার্যকলাপ ডায়াবেটিস দূরে রাখতে কাজ করে।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়