[english_date] | [bangla_day]

ছারপোকার মতো দল কেটে ফেলে এমন কাউকে ঢুকানো যাবে না: তথ্যমন্ত্রী

চিটাগাং মেইল: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার অবিচল দৃঢ়চেতা বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার কারণে পরপর তিনবার আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায়। একটি শক্তিশালী ঘরের মধ্যে যদি একটি পিলারে পোকা লাগে তাহলে সেই ঘর কিন্তু নড়েবড়ে হয়ে যায়।

সুতরাং আমাদের দলের মধ্যেও এমন কাউকে ঢুকানো যাবে না যারা ছারপোকার মতো দল কেটে ফেলে।

তিনি বলেন, আজ যে সরকার সেটা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার, সরকারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নয়, সুতরাং দল যেন সরকারের মধ্যে ঢুকে না যায়, সেটি মাথায় রাখতে হবে। দল শক্তিশালী হলে সরকারও শক্তিশালী হবে। ক্ষমতায় থাকলে দায়িত্ববান হতে হয়, আমাদেরও অন্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে অনেক দায়িত্ববান হতে হবে।

YouTube player

বৃহস্পতিবার ২৪ জুন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সহসভাপতি অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা মঈন উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, স্বজন কুমার তালুকদার, মহিউদ্দিন রাশেদ প্রমুখ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত ৪০ বছরের পথচলায় আমরা কে কতটুকু জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকতে পেরেছি জানি না, কিন্তু ৪০ বছরের দীপ্ত পথচলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আছেন এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আছেন। তাকে বারবার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধু কন্যা কখনো বিচলিত ও দ্বিধান্বিত হননি, বরং আরও দীপ্ত পদভারে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণের পদযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সেই কারণে আজকে মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর বিএনপি, মুসলিম লীগ ও জাসদের লোকজন বলত আওয়ামী লীগ আর কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাদের সেই দম্ভকে চুরমার করে ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল ক্ষমতায় আসে। আবার ২০০৮ সালে ধস নামানো বিজয়ের মাধ্যমে দেশের মানুষ পরপর তিনবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে শেখ হাসিনাকে। পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবার পেছনে যার একক অবদান তিনি হচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, যদি দেশ পরিবর্তন করতে হয় তাহলে ক্ষমতার ধারাবাহিকতা থাকতে হয়। আমরা যদি এশিয়ার বিভিন্ন দেশের দিকে তাকায় তাহলে সেটি দেখতে পাই। ষাটের দশকে স্বাধীনতা অর্জনের পর সিঙ্গাপুরে একই দল এখনো রাষ্ট্র চালাচ্ছে। মালয়েশিয়া ষাটের দশকে স্বাধীনতা অর্জনের পর দীর্ঘ ৫০ বছর একই দল রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, এখনো আছে। আজ আমরা সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার বদলে যাবার গল্প শুনি। যদি জননেত্রী শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে দেশ পরিচালনার সুযোগ পান তাহলে এখন যেমন বাংলাদেশের বদলে যাবার গল্প পৃথিবী শুনছে, এ গল্পের আওয়াজ আরও বেশি শুনবে।

তিনি বলেন, অব্যাহতভাবে জনগণের রায় পেতে হলে আমাদের কর্মীদের প্রতি একটি নিবেদন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। বিনয়ের কোনো বিকল্প নেই। সব উন্নয়ন অর্জন ধূলিসাৎ হয়ে যায়, যদি ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা উদ্যতপূর্ণ আচরণের কারণে। আমি অনুরোধ জানাব আমরা রাষ্ট্রক্ষমতায় সেজন্য আমাদের বিনয়ী হতে হবে। বিনয়ের কোনো বিকল্প নেই।

YouTube player

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় তখন বাংলাদেশে জিডিপি গ্রোথ রেট ছিল ৭ দশমিক ৪, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪০ বছরে সেটি আমরা অতিক্রম করতে পারিনি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেটি আমরা অতিক্রম করেছি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন দেশের এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না, তখন স্কুলের খেলার মাঠেও ধান চাষ করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন দেশে ১০ হাজার মেট্রিকটন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন হয়েছে। এরপরে দেশ আবার খাদ্য ঘাটতির জনপদে পরিণত হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন সিঙ্গাপুর জেলেপল্লি থেকে আস্তে আস্তে মাথা উঁচু করছে, আর দক্ষিণ কোরিয়া ছিল আমাদের চেয়ে দরিদ্র জনপদ, আশির দশকের শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতে আসত। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে সিঙ্গাপুর, কোরিয়া কিংবা মালয়েশিয়ার অনেক আগেই বাংলাদেশ হতো উন্নত দেশ।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়