চিটাগাং মেইল ডেস্ক: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও শুরুর দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শরীরে তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। চলতি সপ্তাহের প্রথম দুদিন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর শরীরে জ্বর এলেও গত প্রায় ৬০ ঘণ্টায় তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন, তার শরীরে কোনো ব্যথা নেই। ২-৩ দিন পর তিনি করোনামুক্ত হয়েছেন কি না জানতে আবারও পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন, যেকোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে ১৪-১৫ দিন পর আবার পরীক্ষা করা হয় তার শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কি না জানতে। আজ খালেদা জিয়ার করোনা আক্রান্তের ১২তম দিন শেষ হবে। ১৪ অথবা ১৫ দিনের মাথায় তার আবার পরীক্ষা করা হবে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের শরীর আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে। গত তিন দিন ধরে তার শরীরে কোনো ব্যথা নেই। আজকে রাতে আমরা আবার তাকে দেখতে যাব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার আরেক চিকিৎসক বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ভালো। কিন্তু তিনি এখনই করোনামুক্ত এটা বলা যাবে না। সাধারণত করোনা আক্রান্তের ১৪ দিনের মধ্যে মানুষ এই ভাইরাসমুক্ত হয়ে যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এক মাসও সময় লাগে। তাই আমরা ম্যাডামের ১৪ অথবা ১৫ দিনের মাথায় আবার করোনা পরীক্ষা করব।’
এর আগে সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে খালেদা জিয়াকে দেখে এসে ডা. জাহিদ বলেন, ‘বেগম জিয়ার গত ৪২ ঘণ্টা জ্বর ছিল না। এটি একটি ভালো দিক। বিষয়টি আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। তার অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। ডাক্তারি ভাষায় তার বিপি (রক্তচাপ) অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য। তার অন্যান্য উপসর্গও বৃদ্ধি পায়নি অথবা নতুনভাবে দেখা দেয়নি।’
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি ছাড়াও তার বাসভবন ফিরোজার আরও ৮ জন ব্যক্তিগত স্টাফ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হন। তাদের চিকিৎসাও এখানে চলছে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের নির্দেশনায় চিকিৎসা চলছে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর। গত ১৫ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান করা হয়। সেটির ফলাফলও ভালো এসেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে ছিলেন তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। দুই দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।