রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পট যানজটমুক্ত করতে অভিযান চালিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। আজ সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী উপজেলার রোয়াজারহাট, পৌরসভা, মরিয়মনগর, চন্দ্রঘোনাসহ ব্যস্ততম বিভিন্ন স্পটে এই অভিযান চালানো হয়। অভিয়ানের পরপরই অনেকটা যানজটমুক্ত হয়েছে উপজেলার এসব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলো। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার এরশাদ হোসেনসহ থানার পুলিশ সদস্যবৃন্দ।
সকাল ১১ টায় উপজেলার রোয়াজারহাট বাজারের মধ্য দিয়ে এই অভিযান শুরু হয়। অভিযানকালে এলোমেলোভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নির্ধারিত জায়গায় সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড় করানো হয়। এসময় সড়কে যানজট রুখতে সড়ক দখলমুক্ত রাখা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধ, সড়কের আশেপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারণা চালানো হয় এবং এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাজারের ব্যবসায়ী ও পরিবহন সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন সার্কেল এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
এদিকে পুলিশের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী, বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সাধারণ যাত্রীরা। মো. সেলিম নামে এক ব্যবসায়ী জানান, রাঙ্গুনিয়ায় এমন অভিযানের খুব প্রয়োজন ছিলো। উপজেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি বাজারে প্রবল জ্যামের কারণে ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। অসহনীয় যানজটের কারণে আমাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডসহ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কার্যাবলী চরমভাবে ব্যাহত হয়।
পুলিশ প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সাধারণ যাত্রীরা বলেন, তারা অবশেষে মানুষের মনের ভাষা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। তবে অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করলেও কয়েকদিন পর যানজট পরিস্থিতি যেন যেই লাউ সেই কদু না হয়ে পড়ে, এ ব্যাপারে নজর রাখতে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
দীর্ঘদিন যাবত অল্প কিছু যানবাহন চালকের খামখেয়ালির কাছে জিম্মি হয়ে থাকার পর মুক্ত সড়ক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছে সর্বমহলের কাছে। জানতে চাইলে রোয়াজারহাট বাজার কমিটির সহ সভাপতি বদিউর খায়ের চৌধুরী লিটন পুলিশের এই কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, সড়কে অবৈধ গাড়ি পার্কিং, সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করানো, সড়কের পাশের ফুটপাত দখল করে বসে থাকা এসবের কারণে এই বাজারে সব সময় যানজট লেগে থাকে। বর্তমানে এএসপির অভিযানের পর সম্পূর্ণ যানজট মুক্ত হয়ে গেছে এই বাজার। এই ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।
এ প্রসঙ্গে এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জনগণের রাস্তা অবশ্যই জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়, এমন কর্মকাণ্ড করার অধিকার কারো নেই। প্রাথমিকভাবে রাস্তায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যানবাহনগুলোকে একটা সুযোগ দিয়ে সব নিয়মকানুন বুঝিয়ে একটা ব্যবস্থা চালু করে দেওয়া হয়েছে। কি করা যাবে, কি করা যাবে না, এ সম্পর্কে চালকদেরকে যথাযথভাবে ব্রিফও করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যারা এই নিয়ম অমান্য করে সড়কের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে সড়ক শৃঙ্খলার বর্তমান পরিস্থিতি ধরে রাখার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা, বিশেষ করে ব্যস্ততম কাপ্তাই সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট অসহনীয় যানজটে পতিত। পূর্বে প্রশাসনের তরফ থেকে একাধিকবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সংশ্লিষ্টদের অসহযোগিতায় তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। সার্কেল এএসপির গৃহীত উদ্যোগ টেকসই হলে সর্বস্তরের মানুষ এর সুফল লাভ করবে বলে অভিমত সচেতন মহলের।