[english_date] | [bangla_day]

নগরীতে চিকিৎসা বঞ্চনা রুখতে ৬ হাসপাতালে অভিযান

Info Chittagong

চিটাগাং মেইল: চট্টগ্রামে চিকিৎসা বঞ্চনার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কঠোর অ্যাকশনে গেল প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে চট্টগ্রামের বেসরকারি ৬টি হাসপাতালে অভিযানে নেমেছে নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টা থেকে একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে নগরীর শেভরন, ডেল্টা, সিএসসিআর, মেডিকেল সেন্টার, রয়েল ও ন্যাশনাল হাসপাতালে।

চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে গঠিত সার্ভেইল্যান্স টিম ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের বেসরকারি ২০ হাসপাতালকে নোটিশ দিয়েছে। দৈনিক কত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তার তথ্য জানাতে বলা হয়েছিল। সেই তথ্যও দিচ্ছিলো হাসপাতালগুলো। তবে হাসপাতালগুলোর দেওয়া তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে ম্যাজিস্ট্রটের নেতৃত্বে অভিযানও পরিচালনা করা হচ্ছে আজ থেকে।

সরকারি নির্দেশনার পরও আড়াই মাস পর এসে কয়কটি হাসপাতালে কভিড রোগীদের চিকিৎসা দিলেও সিংহভাগ হাসপাতালই করোনা রোগী দূর উপসর্গ আছে এমন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে। হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে প্রতিদিন মৃত্যুর খবর আসছে গণমাধ্যমে। এ নিয়ে চট্টগ্রামের মেয়রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস চট্টগ্রামের প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন৷Info Chittagogng

সার্ভেইল্যান্স টিমের আহ্বায়ক চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘অনেক অনুরোধ করা হয়েছে সর্তক করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা যে তথ্য দিচ্ছে সেই সবের সাথে গণমাধ্যমে আসা চিকিৎসা বঞ্চনার খবরের মিল নেই। তাই এবার আমরা মুখ্যসিচব মহোদয়ের নির্দেশে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকসহ সিএমপির সহযোগিতায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অভিযান পরিচালনা করছি। তথ্যের গরমিল পেলে আর কেউ চিকিৎসা বঞ্চনার যে অভিযোগ তুলবে তা প্রমাণিত হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টা থেকে দুই জন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে শেভরন, ডেল্টা, সিএসসিআর, মেডিকেল সেন্টার, রয়েল ও ন্যাশনাল হাসপাতালে অভিযান চালানো হচ্ছে।

চট্টগ্রামে একদিকে বাড়ছে কোভিড-১৯ রোগী, অন্যদিকে চিকিৎসার জন্য হাহাকার চলছে। গত ৩০ মে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে চিকিৎসা সেবা মনিটরিংয়ের জন্য সার্ভেইল্যান্স টিম গঠন করা হয়। এই টিমের প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে।

কমিটির অন্যান্য সদ্যরা হলেন- চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), জেলা সিভিল সার্জন, সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রামের সভাপিত ও প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক।

সার্ভেইল্যান্স টিম বুধবার (৩ জুন) নগরীর ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিককে চিঠি দিয়ে সেসব প্রতিষ্ঠানে দৈনিক কত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তার তথ্য চেয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে বা ক্লিনিকে কত রোগী দৈনিক সেবা নিতে আসেন, এর মধ্যে কতজন সাধারণ ও কতজনের কোভিড-১৯-এর উপসর্গ আছে, কতজনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে, কাউকে সেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছি কি না, দিলে তার কারণ এবং হাসপাতালে মোট শয্যা সংখ্যা— এসব তথ্যও চাওয়া হয়েছে।

হাসপাতালগুলো এখন যে তথ্য দিচ্ছে তা জনসম্মুখে প্রতিদিন সকাল দশটায় হাসপাতালের ফ্রন্ট ডেস্কে প্রদর্শন করার নির্দেশনা দিয়েছে সার্ভেইল্যান্স টিম।

এদিকে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনও বলেছেন, ‘এখন আর অনুরোধ করা হবে না। যেসব হাসপাতাল নানা অজুহাতে রোগী ভর্তি করাবে না। তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

জানা গেছে, নগরে ৯০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ১৮৩টি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) আছে। এসব হাসপাতালে অনুমোদিত শয্যা আছে চার হাজার ১৫৭টি। এর মধ্যে শত শয্যার বেসরকারি হাসপাতাল আছে এক ডজনেরও বেশি। পার্কভিউ, ন্যাশনাল, ম্যাক্স, মেট্রোপলিটন, মেডিকেল সেন্টার ও সার্জিস্কোপ এর মধ্যে অন্যতম। আবার রয়েল, সিএসসিআর, ডেল্টাসহ দেড় ডজন হাসপাতালের প্রতিটিতে শয্যা আছে পঞ্চাশেরও বেশি। এসব হাসপাতালের সঙ্গে আছে প্যাথলজিক্যাল ল্যাব। আছে আইসিইউ। আছে ভেন্টিলেশন সুবিধাও। কাগজে কলমে ৩১টি আইসিইউ থাকলেও এইচডিইউসহ অন্যান্য বিশেষায়িত ইউনিট যুক্ত করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা যাবে আরও দ্বিগুণসংখ্যক রোগী। কিন্তু কোনো বেসরকারি হাসপাতালই করোনা রোগীদের দিতে চাচ্ছে না সেবা।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়