[english_date] | [bangla_day]

করোনা রোগী ফিরিয়ে দিলে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল

চিটাগাং মেইল: করোনা উপসর্গ কিংবা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া কোনো রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দিলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শনিবার (৩০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠকে হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকদের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সভাপতিত্বে সভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন জানান, চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় কীভাবে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে যুক্ত করা হবে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক মালিকরা তাদের কিছু সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সীমাবদ্ধতা মাড়িয়ে ‘যা আছে তা দিয়ে’ করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে তাদের বলা হয়েছে।

‘নগরের বড় বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিটিতে অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশাপাশি আলাদা ফ্লু কর্নার, আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে আলাদা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে করোনা উপসর্গ কিংবা করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে।’

মো. কামাল হোসেন বলেন, সরকার গত ১৭ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছে। চট্টগ্রামে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল এই নির্দেশ অমান্য করে রোগী ফিরিয়ে দিলে লাইসেন্স বাতিলসহ আইনি ব্যবস্থা নেবো আমরা।

তিনি বলেন, বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক এবং স্থাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রণোদনার প্রস্তাব এসেছে। যেহেতু এই হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের কাছ থেকে ফি নিয়ে সেবা দেওয়া হবে তাই হাসপাতাল মালিককেই প্রণোদনা দেওয়ার কথা আমরা বলেছি।

‘এরপরেও সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য আলাদা কোনো প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়ে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলবো। বেসরকারি চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সরকারি প্রণোদনা নিয়ে দিতে আমরা সব ধরণের প্রচেষ্টা চালাবো।’

পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান বলেন, সভায় নগরের বেসরকারি পার্কভিউ এবং রয়েল হাসপাতালকে পুরোপুরি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে তৈরির প্রস্তাবনা দিয়েছি। অন্য হাসপাতালেও সাধারণ রোগীদের পাশাপাশি করোনা রোগীদের আলাদা কর্নারে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা উপসর্গ কিংবা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না পেলে তার স্বজনেরা সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযাগ দায়ের করতে পারবেন। মামলা করতে পারবেন। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ওই হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বৈঠকে নগরের বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই হাসপাতালে শুধু করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, পার্কভিউ ছাড়া অন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও আলাদা কর্নার করে করোনা উপসর্গ কিংবা করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোন হাসপাতালে কতটি বেড কিংবা আইসিইউ স্থাপন করা হবে, তা দেখতে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।

‘মনিটরিং কমিটি করোনা রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। কোনো বেসরকারি হাসপাতাল করোনা রোগীদের ফিরিয়ে দিলে ব্যবস্থা নেবে।’ যোগ করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

সভায় অংশ নেওয়া বেসরকারি ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. লিয়াকত আলী বাংলানিউজকে বলেন, যারা রোগীদের সেবা দেবেন সেই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে নিজেরাই এখন অসুস্থ। ফলে আমাদের লোকবল একেবারে কমে গেছে।

তিনি বলেন, যা লোকবল আছে- তা দিয়ে অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।

‘তারপরেও সরকারি নির্দেশনা মেনে আমরা করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেবো। সভায় করোনা রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া হবে সেই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

বৈঠকে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, বিএমএ চট্টগ্রাম সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবালসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সুত্র: বাংলানিউজ।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়