অজানা কান্তার
দীর্ঘ দিবস বয়ে বেড়াচ্ছে
অচেনা তুমুল বাঁচার লড়াই
বেদনা বুকে গুমরে কেঁদে ওঠে
জীবনের কলরোল।
মরীচিকায় ম্লান হয়ে শশীর শিখা
চিতার আগুনের মতো তাতিয়ে উঠছে- জীবনখানা।
নিষ্পলক চেয়ে থাকা সফেনগুলো চষে হাঁটছে –
পৃথিবীর চারদিকে ;
নিঃসঙ্গ জীবন হিম হয়ে
ডুবে গেছে অজানা কান্তারে।
২:
জীবন অভিসার
পথের তালাসে – আঁখি দুটি
পাতাঝরা আঁধারে খুঁজে – জীবন অভিসার
গোধূলি পার হয়ে ভোরের আযান অব্ধি
মাঠে মাঠে রঙ ফলায় সমস্ত আত্মারা!
মেঘের মতো লুকোচুরি খেলে
আলোর সন্ধানে
যে জীবন ছেড়ে যায় সে জীবন ফিরে আসে
ঝড়ের শেষে
গভীর রাতে স্বপ্নের মতো চমকে ওঠে ধোঁয়া
মলিন চোখের কুন্ডলী
সমুদ্রের জলে মিশে গিয়ে
জোনাকিরা ফকফকিয়ে হাসে
নক্ষত্রের তলে
জীবন ছুঁয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সুখের স্বাদ, মৃত্যু পর্যন্ত।
৩:
সুখ
অশ্বত্থের নিচে চরে মানুষ
খায়- দায়, ফুর্তি – ফতোয়া সব করে
উড়ে বেড়ায় এঘর-ওঘর
ঘাস খায়, মাঠ খায় আরও খায় মানুষ
কড়ি দিয়ে কেনে জীবন, কড়ি দিয়ে বানায় সুখ
সোনার রাজ্যে সোনা কিনে
তবুও ভরে না চিবুক।
৪:
পাঁচ কালিমা
জীবন হেসে ওঠে বলে ; এই তো বেশ আছি
মাইলের পর মাইল যাচ্ছি
দীপ জ্বেলে
অনেক সময় ধরে গাধার পিঠে চড়ে
সূর্য থেকে রস খেয়ে, পাখির গুঞ্জন শুনে
খবিশের মত জিভে জল খেয়ে
ডুকর গিলি তৃপ্তির
অথচ পাঁচ কালিমার মহত্ত্ব কি
চিতাবাঘের মত চিৎকারে বলি
এসব গোল্লার যাক
ভোরাইয়ের গানে স্বর্গকে ভুলে
মজে উঠি নরকের জগতে।
৫:
বসন্ত কফিন
নিখুঁত বিন্যাসের একটি হাসি
অতিক্রম করে
মৃত কোনো দীর্ঘশ্বাস…
ফেলতে ফেলতে সুতোর সব বাঁধন খুলে
উম্মাদের সীমারেখায় আঁকে
অসংলগ্ন কথার ফুলঝুরি।
দুঃখ ও বিষাদের ছাঁইয়ে পুড়ে
সোনাবরণ আঁখি দুটি
রক্তাবরণ মদে
ঘুমিয়ে পড়ে
আর মাথা রাখে বসন্ত কফিনের উপর।
৬:
অ্যালকোহল
যে আত্মার এক – একটি চোখ
নানাভাবে নৃত্য করত
সে আত্মা আজ ঘন ঘাসের ঝোপে
দেবদূতের ভয়ে
যম যম বলে লাফিয়ে – নিষ্পাপ মুখগুলো
ছুঁড়ে ফেলছে মেষপালক চরে
উচ্চ কন্ঠে বজ্রধ্বনির মার্গে
চীন শহরের ফুলগুলো ইতালির করিড়োরে
সাদা সাদা তুষারের পোষাকে স- বান্ধব
অস্তমিত সূর্যের নিচে তালাবন্ধ!
স্বর্গচ্যু আত্মারা
নক্ষত্রের নিচে ক্ষয়হীন সৈকতে ভাসমান
শুঁয়াপোকা, ডাঁশমাছি, বিড়ালের ছানাচোখ
জলদেবতা, স্হল দেবতা ও মানুষ দেবতার মগজে চষে বেড়াচ্ছে
বাঁচার শান নিষ্ঠুরতার কবরে টোপটা ফেলে
গো- কাল
এমন সময়ে মৃতের পোষাক পরিহিত অ্যালকোহল
ঘেঁষাঘেঁষিতে সতেজ মুখমণ্ডলে বিবর্ণ কলরব শুনি
বাঘ! বাঘ! বাঘ…..
৭:
দীর্ঘশ্বাস
কতদিন দেখি না
তোমার জলভরা বিস্ময়
জ্যোৎস্নারাত্রির অবকাশে নিবিড় মায়ায়
কতদিন হাসে না
তোমার চারুশিল্পময় চোখ !
এই দুরত্বের কাব্যটি
কার বুকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে?
আমি নির্জন নদীর স্রোতে ভেসে
খুঁজেছি কাকে জানি না
শত শত পান্ডুলিপি, লেখা হচ্ছে তার বিষন্নতায়।