[english_date] | [bangla_day]

সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ডিবি হেফাজতে রিমান্ড আবেদন করা হবে আজ

ডেক্স রিপোর্টঃ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রাখা হয়েছে। রোববার তাকে আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া। তিনি আরও জানান “উনাকে এখন ডিবিতে রাখা হয়েছে। আজকে আদালতে তুলে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে,”। সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করে র‍্যপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব।

অন্যদিকে, একই রাতে বরিশাল-২ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম তালুকদারকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্যমতে, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহে আলম তালুকদারকে মারধরের পর ঢাকার গুলশান থানায় হস্তান্তর করে একদল মানুষ। পরে কোটা আন্দোলন চলাকালে গত ১৯শে জুলাই নিহত শিক্ষার্থী নাঈম রহমান হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।তাকেও রোববার আদালতে তোলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু আহমেদ।

আগে যারা গ্রেফতার হয়েছেন:

গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দুই ডজনেরও বেশি মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং শেখ হাসিনার সাবেক জ্বালানি, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী রয়েছেন।এছাড়া সাবেক দুই আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং এ কে এম শহীদুল হকসহ পুলিশের বেশ কয়েকে জন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে, যেগুলোর বেশির ভাগই হত্যা মামলা।এছাড়া গণহত্যা এবং অপহরণের মতো অভিযোগেও মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে। ওইসব মামলার আসামির তালিকায় তার ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামও রয়েছে। একইভাবে নাম রয়েছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ অনেক নেতাদের।

তাদের মধ্যে গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাবার পরপরই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন তার আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভার একাধিক জন। সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। একই দিনে তার কিছুক্ষণ পর আটক হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেয়। তাদেরকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে বিমানবন্দর সূত্র নিশ্চিত করেছিল।

যদিও পরে আবার পলক, সৈকত ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে একই দিনে খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তবে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সম্পর্কে এখনও কিছু জানায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সেসময় বিমানবন্দর থেকে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এবং ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদকেও আটকের খবর আসে গণমাধ্যমে। তবে, তাদের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে কোনও তথ্য মেলে নি।

এদিকে, সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, গুম ইত্যাদির মামলা করা হচ্ছে।তাদেরকে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে, অনেককে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এখন পর্যন্ত যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মণি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান।

এছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেননও গ্রেফতার হয়েছেন।

সরকারের মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেমন গ্রেফতার হয়েছেন, তেমনি সাবেক অনেক কর্মকর্তাও আটক হয়েছেন।

এদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত সেনা কর্মকর্তা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান।

পাঁচই অগাস্ট সরকার পতনের পর তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।সেইসাথে চট্টগ্রাম বন্দরের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, যিনি এক সময় র‍্যাবে কর্মরত ছিলেন, তাকেও আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

সূত্রঃ বাসস

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়