[english_date] | [bangla_day]

হঠাৎ পা মচকে গেলে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক: বাস থেকে দ্রুত নামাতে গিয়ে কর্নিয়ার ডান পা মচকে গেল। এরপর ব্যথায় কুঁকিয়ে ওঠেন তিনি।

তখন পথচারীদের সহায়তায় নিলেন তিনি। কর্নিয়ার মতো অনেকের রাস্তা-ঘাটে চলতে গিয়ে অসাবধানতাবশত হঠাৎ পা মচকে যেতে পারে। জুতার সমস্যা, অসমতল পথ, খেলাধুলা, লাফঝাঁপসহ বিভিন্ন কারণে পা মচকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি সকালে বিছানা থেকে উঠতে গিয়েও গোড়ালি মচকাতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, আমাদের শরীরের প্রতিটি জয়েন্টের চারপাশে থাকে লিগামেন্ট। এগুলো জয়েন্টকে শক্ত করে ধরে রাখে। একটা নির্দিষ্ট কোণ পর্যন্ত নড়াচড়া করা যায় সহজেই কিন্তু এর বেশি করতে গেলে ব্যথা লাগে। কোনো কারণে সীমার বাইরে নড়াচড়া হলে লিগামেন্টে টান পড়ে বা কিছু অংশ ছিঁড়ে যায়। এটাকেই মচকে যাওয়া বলে। পা যেহেতু আমাদের শরীরের পুরো ভার বহন করে তাই পা মচকে গেলে খুবই ব্যথা লাগে। এমনকি পা ফুলে যায়। যন্ত্রণার চোটে ঠিক করে দাঁড়ানোয় যায় না। যে কারণে মচকে গেলে হেলাফেলা করা উচিত না। কারণ এখান থেকেই হতে পারে জটিল সমস্যা।

বিশ্রাম নিন
পা ফুলে গেলে ও প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশ্রাম। যন্ত্রণা কমলেও বিশ্রাম না নিয়ে হাঁটাহাঁটি, খাটাখাটুনি করলে গোড়ালির ফোলা থেকেই যাবে। এ সময় অন্তত দুই থেকে তিন দিন বিশ্রাম নিন। ইদানিং ৭ থেকে ১০ দিনের বেশি বিশ্রাম দেওয়া হয় না। বরং সাপোর্ট নিয়ে শিগগিরই হাঁটাচলা শুরু করতে বলা হয়।

বরফ সেঁক

পায়ের ফোলা ভাব কমাতে সবচেয়ে উপকারী বরফ। সরাসরি বরফ দেবেন না, একটা পরিষ্কার কাপড়ে বরফ পেঁচিয়ে সেটা দিয়ে সেঁক দেওয়াটা সঠিক উপায়। চোট পাওয়ার প্রথম ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা বা ফোলা না কমা পর্যন্ত প্রতি এক-দুই ঘণ্টা অন্তর ১০ থেকে ২০ মিনিট ধরে আইস প্যাক লাগান। এতে ফোলা ভাব অনেকাংশে কমে যাবে।

ক্রেপ ব্যান্ডেজ

গোড়ালির ফোলা ভাব কমাতে যেমন সাহায্য করবে আইস প্যাক, তেমনই যন্ত্রণা উপশমে কাজে আসবে ক্রেপ বা ব্রেস। চোট পাওয়ার প্রথম ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা অবশ্যই ব্রেস লাগিয়ে রাখুন। এতে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে অতিরিক্ত টাইট করে ব্রেস লাগাবেন না।

পা ওপরে তুলে রাখুন

পা যত নামিয়ে বা নিচে ঝুলিয়ে রাখবেন, তত ফোলা বাড়বে। তাই দিনে অন্তত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পা ওপরে তুলে রাখুন। শোয়ার সময় হার্ট লেভেলের থেকে পা উঁচুতে রাখবেন। এতে খুব দ্রুত ফোলা ভাব কমে আসবে।

হলুদ

ব্যথার উপশমে হলুদের চল অনেক দিন থেকেই। তাই হলুদ-চুন গরম করে ব্যথার জায়গায় লাগাতে পারেন। যেকোনো পেইন কিলারের থেকে ভালো কাজ করে এই হলুদ চুন। এমনকি দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলেও তাতে ব্যথার উপশম হবে। সকালে খালি পেটে রসুন-হলুদ খেতে পারলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।

কখন যাবেন চিকিৎসা নিতে

পা মচকানোর তিন ধরনের ঘটনা দেখা যায়। এক্ষেত্রে ব্যথার তীব্রতার ভিন্নতা রয়েছে। মৃদু পা মচকানো মানে হলো কেবল জয়েন্টের চারপাশের লিগামেন্ট টান লাগা, এজন্য তেমন কোনো চিকিৎসারও দরকার নেই। মাঝারি তীব্রতার মানে হলো লিগামেন্ট খানিকটা ছিঁড়েও গেছে এবং গোড়ালির সন্ধিও গেছে মচকে। আর তীব্র মাত্রার মানে হলো লিগামেন্ট সম্পূর্ণই ছিঁড়ে যাওয়ার সঙ্গে গোড়ালির সন্ধি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। পরের দুটির জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা জরুরি।

সতর্কতা

এক অংশে বারবার পা মচকানো, যা পড়ে সন্ধিতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষয়জনিত সমস্যা হতে পারে। তাই খেলাধুলা ও দ্রুত হাঁটাচলার সময় সাবধানে থাকতে হবে। পায়ের পাতার ভারসাম্য বজায় থাকে এমন জুতা পরতে হবে, সিঁড়ি ভাঙার সময় সাবধান হোন।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়