[english_date] | [bangla_day]

শিশুর প্রতিদিনের খাবারে যে ৫ বিষয়ে খেয়াল রাখবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক: সুস্বাস্থ্য রাতারাতি অর্জন করা যায় না। এটি হলো ভালো অভ্যাসের ফফল যা শৈশব থেকেই মেনে চলতে হয়। শিশুর সুস্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে মা-বাবার ওপর। কারণ তারাই ঠিক করেন শিশু কী খাবে। বেশিরভাগ মা-বাবাই বিশ্বাস করেন, শিশু সবকিছুই খেতে পারবে। কারণ তাদের বয়স কম, তারা সক্রিয়, দ্রুত হজম করার ক্ষমতা রাখে এবং এত অল্প বয়সে কোনো রোগ শরীরে বাসা বাঁধবে না। বাবা-মা এবং আত্মীয়-স্বজনরা ভাজা সমুচা থেকে শুরু করে চিনির মিষ্টি, ওয়েফার এবং নিমকি সব ধরণের খাবার দিয়ে শিশুদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে চায়। কারণ তাদের ৩০ বছর না হওয়া পর্যন্ত স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস শিশুদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। শুধুমাত্র সচেতনতা থাকলেই শুরু থেকে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গ্রহণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা আজ যা খাই তা আগামীকাল নয় বরং আগামী বছরগুলোতে ফলাফল দেখাবে। তাই কিছু দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস রয়েছে যা শিশুদের অনুসরণ করা শুরু করা উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

সকালের নাস্তা বাদ দেবেন না

বড়রা অনেক সময় তাড়াহুড়ার কারণে সকালের নাস্তা এড়িয়ে যান। কিন্তু শিশুদের জন্য যেহেতু এটি বৃদ্ধি এবং বিকাশের সময়, তাই খাবার এড়িয়ে যাওয়া, বিশেষ করে সকালের নাস্তা, তাদের স্বাস্থ্যকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। কিংস কলেজ লন্ডনের করা একটি সমীক্ষা অনুসারে, যে শিশুরা সকালের নাস্তা বাদ দেয় তারা অপুষ্টির ঝুঁকিতে পড়ে। কারণ তারা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক মূল পুষ্টির প্রস্তাবিত পরিমাণ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়। গবেষণা অনুসারে, যেসব শিশু সকালের নাস্তা বাদ দেয়নি তারা দৈনিক প্রধান পুষ্টি যেমন ফোলেট (জেনেটিক উপাদানের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ), ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং আয়োডিন (থাইরয়েডের কার্যকারিতা বিকাশের চাবিকাঠি) তুলনামূলক বেশি গ্রহণ করেছে।

ফ্যাটযুক্ত খাবার প্রতিদিন নয়

শিশুরা মুখরোচক খাবার খেতে খুব পছন্দ করে। সব সময় দৌড়াদৌড়ি এবং খেলার পরে ক্ষুধার্ত হলে তারা মুখরোচক কিছু খেতে চায়। এক্ষেত্রে বাড়িতে সমুচা বা চিজি পিজ্জা তৈরি করা কোনো ভালো সমাধান নয়। মা-বাবার উচিত সপ্তাহজুড়ে শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা করা। আপনি কি জানেন যে ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার রিলিন নামে পরিচিত একটি মূল প্রোটিনের মাত্রা হ্রাস করে? এই প্রোটিন মস্তিষ্কের সিন্যাপ্সকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। সুইস গবেষকদের করা একটি সমীক্ষা অনুসারে, রিলিনের নিম্নস্তর আচরণগত নমনীয়তা এবং স্মৃতিশক্তিকে বাধাগ্রস্ত করে। সেইসঙ্গে স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং আরও অনেক সমস্যা ডেকে আনে। এর ফলে পরবর্তী জীবনে আলঝাইমার্স রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

চিনির ক্ষতিকর দিক

ক্যান্ডি, বাবল গাম, আইসক্রিম এবং ললি কোন শিশু পছন্দ করে না? চিনিকে ডায়াবেটিসের মতো মারাত্মক লাইফস্টাইল রোগের পেছনে অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই চিনি অল্পবয়সীদেরও প্রভাবিত করে। তাই শিশুদের চিনি খাওয়ার দিকে নজর রাখা আগের চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একটি ভারতীয় সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, শিশুরা প্রতিদিন তাদের প্রয়োজনের চেয়ে তিনগুণ বেশি চিনি খাচ্ছে! তবে তাদের মিষ্টি খাবার থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত করা উচিত নয়। শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় মিষ্টিটুকুই তাকে খেতে দিন। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত চিনি খেলে কী ক্ষতি হতে পারে তা তাকে বুঝিয়ে বলুন।

সবুজ শাক-সবজি খেতে দিন

শিশুকে সব সময় সবুজ শাক-সবজি খেতে দিন। শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদেরও সুস্থতার জন্য সবুজ শাক অপরিহার্য। শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় উপায়ে সবজি দিয়ে বিভিন্ন খাবার তৈরি করতে পারেন। যেমন টিক্কি, পাকোড়া, স্যান্ডউইচ, বেকড ওয়াফেলস, সালাদ এবং সবজি নুডলসের মতো খাবার। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর জীবনের প্রথম দিকে একটি নতুন সবজির সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দিলে তারা বড় হয়েও এই অভ্যাস ধরে রাখে।

স্বাস্থ্যকর খাবার দিন

‌‘স্বাস্থ্যকর’ শব্দটির সঙ্গে শিশুদের খাবারের খুব বেশি মিল নাও হতে পারে। সব ধরনের খাবারকে শিশুরা বিরক্তিকর মনে করতে পারে। বেশিরভাগ শিশুই দুধ, মাছ, সবজি খেতে চায় না। তাদেরকে স্বাস্থ্যকর খাবারই আকর্ষণীয় উপায়ে তৈরি করে দিন। ধরুন, যদি তারা পিজ্জা পছন্দ করে, তাহলে হোলগ্রেইন আটা এবং তাজা, অপ্রক্রিয়াজাত উপাদান ব্যবহার করে বাড়িতে তা তৈরি করে দিন। তারা তেলে ভাজা খাবার খেতে পছন্দ করলে তার বদলে সেঁকে নেওয়া খাবার খেতে দিন।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়