[english_date] | [bangla_day]

পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট প্রদান করতে নির্দেশনা প্রস্তুত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ডেক্স রিপোর্ট : পাসপোর্ট সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট প্রদান করতে কয়েকটি নির্দেশনাসহ একটি সার-সংক্ষেপ প্রস্তুত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

আজ সোমবার এই সার-সংক্ষেপটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

জন ভোগান্তি লাঘবের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো- নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যতিরেকে পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে।

বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যতিরেকে পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে।

পাসপোর্ট পুনঃইস্যুর ক্ষেত্রে বিদ্যমান পাসপোর্টের সাথে চাহিত মৌলিক তথ্যের (নিজ নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ, জন্ম স্থান) পরিবর্তন হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে এবং পাসপোর্ট আবেদনের তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডাটাবেইজ বা জন্মনিবন্ধন ডাটাবেইজের সাথে যাচাই করা হলে তা বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ, ১৯৭৩ এর ৫(২) ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।

সার-সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়, ‘পাসপোর্ট ইস্যু বাংলাদেশের একটি অন্যতম নাগরিক সেবা। দেশের এক কোটিরও বেশি নাগরিক বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার বাংলাদেশী কর্মের উদ্দেশ্যে বিদেশে গমন করে থাকেন। এছাড়া, উচ্চ শিক্ষা, স্থায়ীভাবে বসবাস ইত্যাদি নানা উদ্দেশ্যে বাংলাদেশী নাগরিকগণ বিদেশে গমন করে থাকেন। বিদেশ ভ্রমনেচ্ছু নাগরিকদের জন্য পাসপোর্ট একটি আবশ্যিক ডকুমেন্ট। বর্তমানে দেশে ও বিদেশের পাসপোর্ট অফিসসমূহে প্রতিদিন গড়ে ২৮ থেকে ৩০ হাজার আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং ২৫ থেকে ২৮ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট করা হয়।

এতে বলা হয়, বিদ্যমান ই-পাসপোর্ট সিস্টেমে পাসপোর্টের জন্য ঘরে বসে আবেদন দাখিল ও অনলাইনে ফি জমা দেয়া যায়। আবেদনকারীদের একটি নির্ধারিত দিনে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য এবং পরবর্তীতে পাসপোর্ট গ্রহণের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয়। অনলাইন সিস্টেমে আবেদন দাখিলের পর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানো হয়। ইতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদনের ভিক্তিতে আবেদনকারীর অনুকূলে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়ে থাকে। বিদ্যমান পদ্ধতিতে একটি সাধারণ পাসপোর্ট ১২ কর্ম দিবসের মধ্যে এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির ক্ষেত্রে ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু পুলিশ ভেরিফিকেশন যথাসময়ে না পাবার কারণে বা পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনাবশ্যক কাগজপত্র যাচাইয়ের কারণে আবেদনকারীর ভোগান্তি হয় বলে প্রায়শই অভিযোগ পাওয়া যায়। পাসপোর্টের আবেদনকারীর ভোগান্তি হ্রাস এবং যথাসময়ে পাসপোর্ট প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা তুলে দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সদয় অনুশাসন প্রধান করেছেন।

প্রথাগতভাবে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা এবং বিশেষ ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই) এর মাধ্যমে এ ধরণের তদন্ত সম্পন্ন করে থাকেন উল্লেখ করে সার-সংক্ষেপে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি সুসংগঠিত ও নির্ভরযোগ্য ডাটাবেইজ রয়েছে। পাসপোর্ট সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রদান করা যেতে পারে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তে জন্ম নিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রদান করা যেতে পারে। এই ডাটাবেইজের সাথে আবেদনের তথ্য মিলে গেলে সে অনুসারে পাসপোর্ট ইস্যু করা হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রযোজ্য হবে না।

উল্লেখ্য, রোববার সকালে নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৫’ এর উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এখন থেকে পাসপোর্ট পেতে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না।

তিনি বলেন, ‘পাসপোর্ট আমাদের নাগরিক অধিকার। জন্মসনদ ও এনআইডির মতো পাসপোর্টও এই দেশের নাগরিকদের একটি পরিচয়পত্র। জন্মসনদ ও এনআইডির জন্য আমাদের যেমন পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগেনি, তেমনি পাসপোর্টের জন্যও লাগবে না। এই দেশের নাগরিক হিসেবেই আমরা তা পাবো।’
সূত্র: ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস)

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়