মোহাম্মদ তৌফিকুল হাসান
বর্তমানে চট্টগ্রামে বিয়ের বাজারে একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশেষ করে তরুণদের জন্য, বিয়ের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাবিন এবং সামাজিক চাপ নতুন সংকটের জন্ম দিয়েছে। একদিকে যেমন মেয়েপক্ষের পক্ষ থেকে উচ্চমানের কাবিনের দাবি তোলা হচ্ছে, অন্যদিকে ছেলে পক্ষের জন্য এটি একটি গুরুতর আর্থিক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন চাকরি করা এক যুবক কিভাবে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা কাবিন প্রদান করবে? এই প্রশ্নটি বর্তমান চট্টগ্রামের অনেক পরিবারের উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাকরি শুরু করা একজন যুবক যে অল্প বেতনে কাজ করছেন, তার পক্ষে এই পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করা অসম্ভবের কাছাকাছি। ফলে, অনেক ছেলে অতিরিক্ত টাকা উপার্জনের জন্য অসাধু ব্যবসা ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন, যা সমাজে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
মেয়েপক্ষের পক্ষ থেকে ছেলের আর্থিক স্থিতি সম্পর্কে উচ্চাভিলাষী মনোভাব ছেলেদের জীবনে প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে। টাকাওয়ালা ছেলে না পেলে মেয়েদের বিবাহ দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন পরিবার । এতে করে ছেলেরা উচ্চ আয়ের সুযোগ খুঁজতে গিয়ে অনেক সময় অর্থনৈতিক বা সামাজিকভাবে ক্ষতিকর সিদ্ধান্তে আসছে।
এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে কিভাবে একটি সঠিক সমাধান পাওয়া যায় তা ভাবনার বিষয়। সামাজিক মানসিকতা এবং কাবিনের পরিমাণে সংস্কার আনা হলে হয়তো এই সমস্যার সমাধান কিছুটা সহজ হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, প্রশাসনিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিয়ের ক্ষেত্রে কাবিনের অর্থনৈতিক চাপে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিরাপদ ও সুস্থ রাখতে এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা অত্যন্ত জরুরি।
চট্টগ্রামের সমাজ ও পরিবারগুলোকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন যুবসমাজ, যেন সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য একটি সমন্বিত ও সুস্থ বিবাহ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।