[english_date] | [bangla_day]

বাজেটে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে

চিটাগাং মেইল ডেস্ক:  এবারের বাজেটে দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও তাদের জীবন-জীবিকাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সংসদে দেওয়া বাজেট বক্তব্যে তিনি এমন দাবি করেন।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ঝুঁকি তৈরির পাশাপাশি অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। আমাদের স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় রোধের মাধ্যমে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করে যেতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে আমরা দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতীয় বাজেটে সাধারণত আমরা সুসংহতভাবে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার রূপরেখা প্রণয়ন করে থাকি। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এবছরও সব তথ্য-উপাত্ত পরিপূর্ণভাবে আমাদের সামনে নেই। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক অভিঘাত মোকাবিলা করে বাংলাদেশ যখন অন্যান্য দেশের তুলনায় দ্রুতগতিতে অর্থনৈতিক উত্তরণের পথে এগিয়ে চলছিল, তখনই সারাবিশ্বে করোনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিঘাত শুরু হয়। যার প্রভাব সর্বত্রই প্রবল। এজন্য আমাদের এবারের বাজেটেও দেশ ও জাতির উন্নয়নের পাশাপাশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও তাদের জীবন-জীবিকা।

YouTube player

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, গত ৫ দশকে বাংলাদেশ বদলে গেলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জাতির জীবনে সর্বক্ষেত্রে তার সজীব উপস্থিতি রয়েছে। তার নির্দেশিত পথেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। এ বছরই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীর দুই বলিষ্ঠ প্রবাহের মিলনমেলায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ। এর হাত ধরেই বিশ্বসভায় বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে নেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে প্রায় ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা পেয়েছি। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা পেতে যাচ্ছি। পাশাপাশি করোনা টিকা কেনার জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ভ্যাক্সিন সাপোর্ট পেতে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপির হার কম থাকা ও সার্বিকভাবে ঋণ সক্ষমতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কোনো সংশয় না থাকায় বিপুল বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়েছে।

করোনা প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ঝুঁকি তৈরি করেছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ফলে আমাদের এখন স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা বাড়ানো ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় রোধের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর মোকাবিলা করে যেতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকায় প্রাধ্যান্য দিয়ে আমরা দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১২ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূর করে ও স্বল্পোন্নত দেশের তলিকা থেকে বেরিয়ে একটি উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা করেছে। কিন্তু জাতীয় জীবনের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে করোনভাইরাসজনিত সংকট আমাদের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য, দারিদ্র্য বিমোচন ও অন্যান্য আর্থ সামাজিক উন্নয়নের গতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষ ও উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বছরটি বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন শুধু আনুষ্ঠানিকতা সবর্স্ব নয়, এই উদযাপনের লক্ষ্য হলো, জাতির জীবনে নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চারিত করা; জাতিকে নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যের খুব সামান্য অংশই পাঠ করেন। এর বড় একটি অংশ তিনি ডিজিটাল প্লাটফর্মে ভিডিও আকারে উপস্থাপন করেন। অর্থমন্ত্রীর অনুরোধে তার ১৯২ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তব্য ‘পঠিত’ বলে সংসদে গৃহীত হয়।

 

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়