[english_date] | [bangla_day]

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, মঙ্গলবার অধ্যাদেশ জারি

চিটাগাং মেইল : ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করতে সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর খসড়া সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে অধ্যাদেশের একটি ধারা সংশোধন করে সশ্রম যাবজ্জীবন ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

বর্তমানে সংসদ অধিবেশন না থাকায় রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবারই (১২ অক্টোবর) এ ব্যাপারে অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কিছুদিনের ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধগুলো কঠোরভাবে দমনের প্রস্তাব আনা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যদি কোনো পুরুষ নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব আসে যে নারী বা শিশু ধর্ষণ জঘন্য অপরাধ, সমাজে নারী বা শিশু নির্যাতন কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এ ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড করার লক্ষ্যে আইনের সংশোধন প্রয়োজন। যেহেতু বর্তমানে সংসদের অধিবেশন নেই, কিন্তু দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে, সেজন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সন্তোষজনক হলে তিনি সংবিধানের দেওয়া ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন।

আইনের ধারা ৯(১)-এ যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রতিস্থাপিত হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মন্ত্রিসভায় এ বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন এবং পরে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে প্রস্তাবটা গ্রহণযোগ্য এবং অবিলম্বে আনা প্রয়োজন। যেহেতু এখন সংসদ কার্যকর নয়, সেজন্য এটা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। বিষয়টি লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আইনের ১১(গ) এবং ২০(৭) ধারা সংশোধন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ধর্ষণ ছাড়া সাধারণ জখম হলে কম্পাউন্ড (আপোষযোগ্য) করা যাবে। আর চিলড্রেন অ্যাক্ট, ১৯৭৪ প্রযোজ্য হবে না। এখন শিশু আইন, ২০১৩ প্রযোজ্য হবে।

কতদিনের মধ্যে বিচার শেষ করা হবে- এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৮০ দিনের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করতে হবে। তদন্ত, বিচার পদ্ধতি সব কিছুই উল্লেখ করা আছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে।

যদি কোনো বিচারক চলে যান, তাহলে তিনি যে অবস্থায় রেখে গেছেন, সেই অবস্থা থেকে পরে বিচার হবে।

এমনিতে এক লাখ টাকা জরিমানা আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এর বাইরে ক্ষতিপূরণের বিধান আছে। এ ক্ষতিপূরণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তা অপরাধীর বিদ্যমান সম্পদ থেকে আদায় করা না গেলে ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক হবেন, তা থেকে আদায় করা হবে।

ধর্ষণের সংজ্ঞায় কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

সাম্প্রতিক আন্দোলনের কারণে কি আইনে পরিবর্তন আনা হলো- এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শুধু আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নয়, অনেকগুলো দেশের আইন আমরা চেক করে দেখেছি। আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি, বাস্তবতা সব কিছু মিলেই হয়েছে। শুধু আন্দোলনের জন্য আসেনি। সরকারের পক্ষ থেকেও এটার প্রচারণা আসছে। মানুষের সচেতনতা এখানে বড় কার্যাকর হিসেবে এসেছে।

এটার একটা পজেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়বে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যারা অপরাধ করবে, তারা অন্তত চিন্তা করবে যে এ অপরাধের শাস্তি তো মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে, এখন তো আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড না। সে কিন্তু একটু হলেও বিরত থাকবে, চিন্তা থাকবে যে মৃত্যুদণ্ড হবে। সমাজে এটার একটা পজেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়বে।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়