চিটাগাং মেইল: দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া মহাদেশের প্রাচীন দ্বীনি বিদ্যাপীঠ আল জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন তিনি কাউকে মুহতামিমের (মহাপরিচালক) দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি।
হাটহাজারী মাদরাসার বর্তমান নায়েবে মুহতামিম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে সরিয়ে অপর একজনকে নায়েবে মুহতামিমের পদ দেওয়া হবে এমন একটি খবর শুক্রবার (১৫ মে) রাত থেকে মুখে মুখে প্রচার হয়ে পড়লে শনিবার সকাল থেকে স্থানীয় দুই পক্ষের শত শত সাধারণ মুসল্লি মাদরাসায় জড়ো হলে দিনভর উত্তেজনা বিরাজ করে। অবশেষে রাতে আল্লামা শফি মুমূর্ষু অবস্থায় ভিডিও বার্তায় এই বক্তব্য দিলে উত্তেজনার সাময়িক অবসান ঘটে।
আল্লামা শফি মুসল্লিদের উদ্দেশে ২মিনিট ৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিও বার্তায় বলেছেন, হাটহাজারী মাদরাসায় মুহতামিম (মহাপরিচালকের) দায়িত্ব পেয়ে আমি কি করেছি না, কিছু কথা, কিছু অপবাদ দিচ্ছে। আমার মুহতামিমের সময়ের মধ্যে কি লাভ হলো, আপনারা সবাই জানেন, পুরা দুনিয়া জানে। সারা জিন্দেগী মাদরাসার জন্য কুরবান দিয়েছি। মাদরাসার জিম্মাদারি (দায়িত্বে) আমি এখনো আছি। আমার অবর্তমানে কে জিম্মাদারির দায়িত্ব নেবে সেটা মাদরাসার শুরা (পরিচালনা) কমিটি করবে। আমি কাউকে জিম্মাদারি (দায়িত্বে) দেইনি। কাউকে নায়েবে মুহতামিম করিনি, কাউকে ভারপ্রাপ্ত মুহতামিমের দায়িত্বও দেইনি। যেগুলো শুনতেছেন সবগুলো গুজব। আমি সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি। আমার জন্য দোয়া করবেন। এর আগে সকাল ১০টা থেকে হাটহাজারী মাদরাসার আশ-পাশ ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। সাধারণ জনগণসহ কয়েকশ স্থানীয় আলেম উলামা মাদরাসায় উপস্থিত হয়েছেন।
সকাল ১০টার দিকে আল্লামা আহমদ শফীর অবর্তমানে জামেয়ার সিনিয়র শিক্ষক আহমদ দিদার কাসেমীকে ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম ও মাও. আনাছ মাদানিকে নায়েবে মুহতামিত করবে বলে স্যোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাটহাজারীর স্থানিয় জনসাধারণ মাদরাসায় অবস্থান করে।
এমন অবস্থায় মাদরাসার কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষকের একটি প্রতিনিধি আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কামরায় গিয়ে পরিস্থিতির কথাগুলো জানিয়ে দেয়। জোহরের নামাজের পর মাদরাসার মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে হাটহাজারী ওলামা পরিষদের সভাপতি মাও. জাফর আহমদ, মাও. মীর ইদরিস ও হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক মুহতামিমের পুত্র হাফেজ সাইফুল ইসলাম জানান, মাদরাসার শুরার সিদ্ধান্ত ছাড়া কাউকে পরিচালক ও সহকারী পরিচালক মানবেন না হাটহাজারীর জনগণ। প্রয়োজন হলে জনগণকে নিয়ে মাঠে নেমে এর প্রতিরোধ করা হবে।