[english_date] | [bangla_day]

খালের মুখের বাঁধ খোলার কথা দিয়েও রাখেনি সিডিএ: মেয়র রেজাউল

নিজস্ব প্রতিবেদক:  চলমান জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নকালে সৃষ্ট জলজটে নগরবাসীর দুর্ভোগে উদ্বেগ জানিয়ে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, এর দায় সিডিএকে নিতে হবে। কারণ পুরো প্রকল্পটি তাদের হাতে।

আমরা সিডিএকে অনুরোধ করেছিলাম, বর্ষার আগেই খালগুলোর যে অংশে বাধ দিয়ে পানি প্রবাহ আটকানো হয়েছে তা অপসারণ করা হোক। কিন্তু কথা দিয়েও সিডিএ কর্তৃপক্ষ কথা রাখেনি।

সিডিএ খালের দু’পাশের যে অংশে রিটার্নিং ওয়াল তুলেছে সেখানে খালের মাঝেই মাটির স্তূপ করেছেন এবং ওই মাটি না সরিয়ে স্কেভেটার দিয়ে সমান করায় খালের মধ্যে রাস্তা হয়ে গেছে। সিডিএ বলেছে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ব্যবস্থাপনা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। কিন্তু প্রকল্পই যখন বাস্তবায়ন হয়নি তখন ব্যবস্থাপনার কথা আসে কেন? সম্পূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বুঝিয়ে না দেওয়ার আগে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে পারি না। মেয়র প্রশ্ন করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ আরও ৩ বছর বাড়ানো হলেও এ সময় নগরকে জলজট থেকে মুক্ত করার কোনো পথ সিডিএ করছে কি?

YouTube player

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ পরিষদের পঞ্চম সাধারণ সভায় মেয়র ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ কালে এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, চসিক নতুন করের হার বৃদ্ধি করবে না। কর আদায়ের আওতা ও পরিধি বাড়ানো হবে। কোনো ভবন যদি দুই তলা থাকা অবস্থায় যে কর দিত এখন যদি তিন তলা, চার তলা বা বহুতল হয়ে যায় তা হলে বর্ধিত অংশের জন্য কর ধার্য কোনো ভাবে অযৌক্তিক হয় না।

তিনি বলেন, চসিককে নগরবাসীর কর দিয়ে চলতে হয় কিন্তু এ আয় দিয়ে সেবার পরিধি বাড়ানো কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই নিজস্ব ভূ-সম্পত্তিতে আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোন এলাকায় কী ধরনের আয়বর্ধক প্রকল্প করা যায় তা নির্ধারণে কাউন্সিলরদের মতামত প্রাধান্য দেওয়া হবে।

চসিকের অব্যবহৃত ভূ-সম্পত্তিতে একাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাবনা এসেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ প্রস্তাবনা যথাযথ কিনা তা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে যাচাই করে নীতিমালার মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দেওয়া হবে। চট্টগ্রামে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎসহ নিত্যব্যবহার্য পণ্য রূপান্তরেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাদের প্রস্তাব বিবেচনাধীন। চসিকের দু’টি টেন্সিং গ্রাইন্ড আছে। এগুলো এখন পাহাড়সমান স্তূপে পরিণত হয়েছে। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এখানকার স্তূপ অপসারণে উদ্যোগী একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলোও বিবেচনাধীন।

মেয়র বলেন, নগরে মেট্রোরেল ও মনোরেল করার প্রস্তাব এসেছে। মেট্রোরেলের ব্যাপারে একটা জরিপ আমাদের আছে, কিন্তু মনোরেলের ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই। মনোরেলের প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটা সত্য যে, একটি আধুনিক শহরের জন্য দু’টি রেল সিস্টেম খুবই কার্যকর। আমাদের ওয়ান সিটি টু টাউন ধারণা মাথায় রাখতে হবে। বে-টার্মিনাল, গভীর সমুদ্রবন্দর, আন্তঃদেশীয় মহাসড়ক ও রেল যোগাযোগ চট্টগ্রাম নগরের ওপর দিয়ে সম্প্রসারণ এবং কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে টানেল হয়ে গেলে চট্টগ্রামের জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক গুরুত্ব বেড়ে যাবে। সর্বোপরি চট্টগ্রাম হয়ে উঠবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক হাব। মিরসরাই, আনোয়ারায় অর্থনৈতিক জোন হয়ে গেলে ৭ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এসব কারণে চট্টগ্রাম নগরের গুরুত্ব বিবেচনা করে আমাদের এখন থেকে ভাবতে হবে।

তিনি বলেন, পলিথিন সভ্যতার অভিশাপ, কর্ণফুলীতে পলিথিনের জমাট ও ভারী আবরণে ড্রেজিং করা যাচ্ছে না। শহরের নদী নালায় ও পলিথিনের স্তূপ পড়ে আছে। এই পলিথিন জলাবদ্ধতার বড় কারণ। পলিথিনমুক্ত নগর গড়তে আইন চাই। ফুটপাত দখলমুক্ত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চলমান থাকবে। নগরে যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলা অবৈধ স্থাপনা ও অসামাজিক কার্যকলাপ রোধে আইনি ক্ষমতাসম্পন্ন সিটি আদালত চাই। নালা-নর্দমা থেকে মাটি উত্তোলন ও তা সরিয়ে ফেলতে ৪১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে ৮ লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

YouTube player

মেয়র বলেন, আসন্ন কোরবানি ঈদের দিনে ১২ ঘণ্টার মধ্যে পশুর বর্জ্য অপসারণ করতে হবে। এ জন্য পরিচ্ছন্ন ও যান্ত্রিক বিভাগকে তৈরি থাকতে হবে।

চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছালে আহম্মদ চৌধুরী, মো. সাহেদ ইকবাল বাবু, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, নাজমুল হক ডিউক, ড. নিছার আহমদ মঞ্জু, মো. মোবরক আলী, আবদুল বারেক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবদুস সালাম মাসুম, মো. শহিদুল আলম, মো. নুরুল আমিন, গাজী মো. সফিউল আজিম, শেখ মো. জাফরুল হায়দার চৌধুরী, মো. কাজী নুরুল আমিন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর নিলু নাগ, আঞ্জুমান আরা, শাহিন আক্তার রোজী, রূমকি সেনগুপ্ত, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়