আজ প্রবীণ দিবস:’বৈশ্বিক মহামারির বার্তা, প্রবীণদের সেবায় নতুন মাত্রা’
মোহাম্মদ হাসানঃ বিশ্ব প্রবীণ দিবস আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও এই দিবসটি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করা হচ্ছে। ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ প্রতিবছর ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রবীণদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বার্ধক্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয়।এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘বৈশ্বিক মহামারির বার্তা, প্রবীণদের সেবায় নতুন মাত্রা’।
বার্ধক্য হলো জীবনচক্রের শেষ ধাপ। জীবনের নাজুক ও স্পর্শকাতর অবস্থা! বেঁচে থাকলে প্রত্যেক মানুষকে বার্ধক্যের সম্মুখীন হতেই হবে। বার্ধক্য মানে শারীরিক অবস্থার অবনতি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতা বাড়লেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি ও হজমশক্তি লোপ পায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না। রক্তচাপ ও হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। দুর্বল স্বাস্থ্য আর উপার্জনহীন একজন প্রবীণ সবার কাছে অবহেলিত, উপেক্ষা ও দুর্ব্যবহারের শিকার। তাঁদের ভরণ-পোষণ, সেবা-যত্ন, চিকিৎসা ও আবাসন সমস্যা দেখা দেয়। প্রবীণদের অনেকে বুঝতে চান না। তাঁদের কল্যাণে কাজ করতেও চান না। হতাশা, বিষণ্নতা ও নিঃসঙ্গতায় চলে প্রবীণদের জীবন। প্রবীণ সেবাসূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৭তম।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও ৬০ বা ৬৫ বয়সের পর একজন মানুষকে প্রবীণ বা ‘সিনিয়র সিটিজেন’ হিসাবে গণ্য করা হয়। সমাজে তাঁদেরকে বিশেষ সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। জাতিসংঘ প্রবীণ জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় কতিপয় নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
এছাড়াও জাতিসংঘ প্রবীণদের অধিকার ও তাঁদের প্রতি কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ প্রতি বছরের ১ অক্টোবর প্রবীণ দিবসকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রবীণদের অধিকার, সুরক্ষা ও বার্ধক্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে দিবসটি পালন করা শুরু করে।
দুঃখ জনক হলে ও সত্য যে, বাবা-মার, ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত ও সচ্ছল অনেক ছেলে-মেয়েই আজ বৃদ্ধ মা-বাবাকে করছে অবহেলা, যা সত্যই কাম্য নয়। আমরা কি এই অবস্তা বদলাতে পারি না? অবশ্যই পারি, শুধু তার জন্য বদলাতে হবে আমাদের নিম্ন মানসিকতা।
সরকার পিতা-মাতার ভরণ পোষণ আইন ২০১৩ পাস করে। এ আইনে পিতা-মাতা, দাদা-দাদি এবং নানা-নানির ভরণ-পোষণ করা সন্তানের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব। অন্যথায় তাদের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
বিংশ শতাব্দীর এই ত্রিমাত্রিক জগতে দাঁড়িয়ে,আমরা কি প্রতিজ্ঞা করতে পারি না যে? আজ থেকে হাজার হাজার লাইক হবে পিতামাতার জন্য, সেলফি হবে পিতামাতার হাসিমুখ। আঙ্গুল কেনো? হৃদয়ের স্পর্শেই যেনো জানাতে পারি বাবা-মার প্রয়োজন।
আমরা পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেনো, ফেসবুক নয়, বাবা-মার প্রশান্তিময় ফেইসই যেনো হয় দিন শুরুর অনুপ্রেরণা, তবেই মনে হয় আমরা এই ষাটোর্ধ্ব প্রবীণদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রর্দশন করতে পারবো। প্রচন্ড শক্তিশালী পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ হউক বিশ্বের প্রতিটি পরিবার ও বাংলাদেশ। ভালো থাকুক বিশ্বের সব প্রবীণ।