[english_date] | [bangla_day]

মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধারে উন্নত বিশ্বের এগিয়ে আসা উচিত

চিটাগাং মেইল ডেস্ক:  চার দফা প্রস্তাব পেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধারে উন্নত বিশ্ব ও উন্নয়ন অংশীদারদের ভূমিকা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (২৬ এপ্রিল) জাতিসংঘ-এসকেপের ৭৭তম অধিবেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।

৭৭তম বার্ষিক জাতিসংঘ-এসকেপ অধিবেশনে প্রচারিত তার ধারণকৃত বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে সার্বজনীন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পন্থা, দক্ষ নীতি এবং কৌশল গ্রহণের আহ্বান জানান।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকেপ) তিন দিনের অধিবেশন আজ (সোমবার) -‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে সংকট থেকে আরও ভালোভাবে উত্তরণ’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে।

শেখ হাসিনা তার বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে টেকসই প্রত্যাবাসনের দিকে মনোনিবেশ এবং যৌথ সমৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি তার প্রথম প্রস্তাবে বলেন, উন্নত বিশ্ব, উন্নয়ন অংশীদার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইএফএস) কোভিড মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসা উচিত।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন পদ্ধতি যে কোনো সংকট থেকে আরও ভালোভাবে উত্তরণের জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক এবং পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত।

শেখ হাসিনা তার তৃতীয় প্রস্তাবে বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উচিত একটি শক্তিশালী ও সার্বজনীন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য দক্ষ নীতি ও কৌশল গ্রহণ করা।

চতুর্থ ও চূড়ান্ত প্রস্তাবে তিনি বলেন, বাণিজ্য, পরিবহন, জ্বালানি ও আইসিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, মিয়ানমার থেকে ১১ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সমাধানের জন্য এ বিষয়ে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি সারা বিশ্বের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে বিধ্বস্ত করেছে। প্রায় ২ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে এবং প্রতিদিন আরও হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন মহামারি অনেক মানুষকে আরও দরিদ্র করে তুলেছে এবং আরও অনেককে দারিদ্র্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

কোভিড-১৯ এর আক্রমণ মোকাবিলায় তার সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি, চাকরি ধরে রাখা এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের জিডিপির প্রায় ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রায় ১৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সর্বশেষ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কোভিড-১৯ থেকে পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশকে অবাধ ও টেকসই এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য প্রস্তুত করা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার দিকে গতিপথ নির্ধারণের কৌশল অন্তর্ভুক্ত ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার পরিবেশ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে অর্থায়নে পরিচালিত কর্মসূচিগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আঞ্চলিক সহযোগিতাকে পারস্পরিক সমৃদ্ধি অর্জনে সর্বাধিক টেকসই উপায় বলে মনে করে। আমরা সার্ক (সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশন), বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনোমিক কো অপারেশন), বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল), বিসিআইএম-ইসি (বাংলাদেশ, চায়না, ইন্ডিয়া ও মিয়ানমার ইকোনোমিক করিডোর) এবং ট্রিলেটারেল হাইওয়ের সঙ্গে আমরা যুক্ত আছি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন’ বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সহায়তা করছে।

তিনি বলেন, আমরা ক্রমবর্ধমান যোগাযোগ এবং এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের ইএসসিএপি-এর উদ্যোগের একনিষ্ঠ সমর্থক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আন্তঃসীমান্ত কাগজ-বিহীন বাণিজ্য, এশিয়া-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তি, পিপিপি নেটওয়ার্কিং ও নবায়নযোগ্য জ্বালানীসহ ইউএন-ইএসসিএপি-এর অন্যান্য উদ্যোগের সাথেও সক্রিয়ভাবে জড়িত আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা গ্লোবাল কম্প্যাক্ট ফর সেফ, অর্ডারলি অ্যান্ড রেগুলার মাইগ্রেশন অর্জনে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়