[english_date] | [bangla_day]

ঐতিহাসিক জায়গাকে আড়াল করার প্রয়াসে শিশুপার্ক আমরা চাই না: সুজন

চিটাগাং মেইল : তৎকালীন বিএনপি সরকার স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে দেওয়ার অংশ হিসেবে ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সামনে শিশুপার্ক নামের জঞ্জাল তৈরি করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক জায়গাকে আড়াল করার প্রয়াসে শিশুপার্ক আমরা চাই না।

আমরা দেখেছি এখানে বসে অনেক অসামাজিক কাজ করছে, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ ঐতিহাসিক স্থান রক্ষায় সম্মতি জানিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে আমি এ উদ্যোগ নিয়েছি। শিশুপার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মনোমালিন্য কিংবা জোর করে তাদের উচ্ছেদের পক্ষে আমি নই। এতে তারা ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তবে কীভাবে সম্ভব তা যাচাই-বাছাই ও সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমি প্রশাসক থাকার আগে নাগরিক উদ্যোগের ব্যানারে অনেকবার এর প্রতিবাদ ও লেখালেখি করেছি। এখন হয়তো সুযোগ হয়েছে এ স্থানটিকে তার হারানো গৌরব ফিরিয়ে দেওয়ার। তাই আমি চেষ্টা করছি। এতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) টাইগারপাসের নগর ভবনে প্রশাসকের দপ্তরে চট্টগ্রামে পুরানো সার্কিট হাউসের আঙিনা থেকে শিশুপার্ক অপসারণ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে তিনি সুজন এসব কথা বলেন।

একাত্তরের স্মৃতিচারণ করে সুজন বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ৯টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। তাই এটি আমাদের আবেগ ও গৌরবগাথার স্থান। এখান থেকেই আমরা স্বাধীন বাংলার স্বাদ পাই। অথচ তৎকালীন বিএনপি সরকার এ স্মৃতিমাখা স্থানটি পরবর্তী প্রজন্মের মন থেকে মুছে ফেলার হীন মানসে এখানে বিনোদন কেন্দ্র তথা শিশুপার্ক নামের জঞ্জাল সৃষ্টি করেছিল।

চসিক প্রশাসকের সঙ্গে শিশুপার্ক কর্তৃপক্ষ তিনি বলেন, আমার মনে আছে সেদিন ছিল শীতের সকাল। মেঘমুক্ত নীল আকাশের নিচে সূর্যালোকে অলস ঢেউয়ের মতো দুলেছিল বাংলার লাল-সবুজ পতাকা। শহরের প্রতিটি প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ, মুক্তিযোদ্ধা, জনতা বাঁধভাঙা স্রোতের মতো ছুটে আসছিলেন সার্কিট হাউসের দিকে। তাদের কণ্ঠে ছিল বিজয়ের জয়ধ্বনি। স্বাধীন সার্বভৌম পতাকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্যালুট এখানেই জানানো হয়েছে। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাকে আমরা হারাতে বসেছি।

ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এমন স্মৃতি বিজড়িত একটি জায়গা রক্ষায় আমিও ভূমিকা রাখতে চাই। আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব ছাড় দেওয়া হবে। তবে আমাদের বিনিয়োগ করা অর্থের একটি সুরাহা করতে পারলে আপত্তি থাকার কথা নয়।

বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাজি এনামুল হক চৌধুরী, চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, এস্টেট অফিসার মো. কামরুল ইসলাম, ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক নাছির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা, প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন সার্কিট হাউসের সামনের শিশুপার্ক উচ্ছেদ করে সর্বজনীন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও স্মৃতিসৌধ গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে স্মৃতিসৌধ না থাকায় বিজয় দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে হয় সর্বস্তরের মানুষকে।

 

 

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়