[english_date] | [bangla_day]

মুখোমুখি আরিফ-সাবরিনা, করোনার ভুয়া রিপোর্টের কথা স্বীকার

ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাস পরীক্ষার নামে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করে সরবরাহের দায়ে গ্রেফতার জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রাথমিকভাবে জেকেজি হেলথকেয়ারে করোনার ভুয়ার রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে প্রতারণার জন্য তারা দু’জনই একে অপরকে দোষারোপ করছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, গতকাল আরিফের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এরপর আরিফ ও সাবরিনাকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা দু’জনই প্রাথমিকভাবে করোনার ভুয়ার রিপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তবে প্রতারণার জন্য একজন আরেকজনকে দোষারোপ করছেন।

জেকেজির মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করলেও আরিফ বা সাবরিনার কার কী ভূমিকা কিংবা কার কী দোষ ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঢাকা মহানগর ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, আরিফকে চারদিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। আজ সাবরিনার রিমান্ড শেষ হবে, আগামীকাল তাকে আদালতে হাজির করে আবার রিমান্ডের আবেদন করা হবে। তাদের আবারো মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

‘জেকেজি করোনায় টেলিমেডিসিন সেবার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সেসব টাকা কোথায় গেছে সেসব খতিয়ে দেখা হবে।’

আরিফ ও সাবরিনা আমাদের জানিয়েছেন, জেকেজি ওভাল গ্রুপের একটি সিস্টার কনসার্ন। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেননি।

ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, তারা জিজ্ঞাসাবাদের প্রথমে একে-অপরকে দোষারোপ করেছেন। তবে আরিফ অনেক কিছু স্বীকার করেছেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত ১২ জুলাই ডা. সাবরিনাকে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে ডেকে জেকেজির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেকেজির সঙ্গে নিজের সম্পৃকক্ততাসহ কোনো বিষয়েই সদুত্তর না পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে তেজগাঁও থানায় পাঠানো হয়। পরদিন ১৩ জুলাই তাকে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হলে তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

জেকেজি হেলথকেয়ারের সিইও আরিফ চৌধুরীর প্রতারণার নেপথ্যে ছিলেন তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে সব যোগাযোগ রক্ষা করতেন সাবরিনাই।

গত ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে আরিফুলসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর থানা-হাজতে থাকা অবস্থায় আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী ভাঙচুর ও হামলা করে থানায়। মারধর করে পুলিশকে।

এছাড়া রাজধানীর মহাখালীর তিতুমীর কলেজে নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণের নামে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও পাওয়া যায়। কলেজের কক্ষে নারী-পুরুষের আপত্তিকর অবস্থানসহ নানা অনৈতিক কাজে বাধা দিলে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রদের ওপরও হামলা করে আরিফুলের লোকজন।

অভিযোগ পাওয়া যায়, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্নজনকে হুমকি দিতেন আরিফ। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালককেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।

জানা যায়, জেকেজির কর্ণধর স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ বিক্রি করেছেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য জনপ্রতি নিয়েছেন সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি তারা নিতেন ১০০ ডলার।

স্বামী আরিফুলের গ্রেফতারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের নাম বদলে রাখেন সাবরিনা মিষ্টি চৌধুরী। তাকে স্বামী আরিফুল নির্যাতন করতেন এমন অভিযোগও তোলেন।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়