তৌফিক হাসানঃ সম্প্রতি সারাবিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসে মানুষের জনজীবন প্রায় বন্ধ । সেই সাথে বাড়ছে সংক্রামণের আতঙ্ক । সাধারণ কোন জ্বর কিংবা সর্দি-কাঁশি হলেই অনেকটা ভীত হয়ে পড়ছি আমরা । অতিরিক্ত দূঃচিন্তা ও না-বোধক বিতর্কে নিজেকে আরো দূর্বল করে ফেলছি আমরা । কিন্তু ২০২০ সালের সর্বশেষ ৩ মাসে বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা দেখে নিই এক নজরে-
করোনার ভাইরাস- ৩,৬৯,৯৩০ জন
সাধারণ সর্দি- ৩,৬৯,৬০২ জন
ম্যালেরিয়া- ৩,৪০,৫৮৪ জন
আত্মহত্যা- ৩,৫৩,৬৯৬ জন
সড়ক দুর্ঘটনা- ৩,৯৩,৪৭৯ জন
এইচআইভি- ২,৪০,৯৫০ জন
অ্যালকোহল ইনফেকশন- ৫,৫৮,৪৭১ জন
ধূমপান- ৮,১৬,৪৯৮ জন
ক্যান্সার- ১১,৬৭,৭১৪ জন
তাহলে আপনি কি করোনাকে বিপজ্জনক বলে মনে করেন?
৬০,৮১,২০৮ জন এই মুহুর্তে করোনভাইরাস দ্বারা অসুস্থ, যার মধ্যে ২৬,৮৮,২৫০ জন সুস্থ হয়ে গেছেন ইতোমধ্যে, বাংলাদেশে আক্রান্ত ৪৪,৬০৮ জন, যার মধ্যে ৯,৩৭৫ জন (২১.০২%) সুস্থ । এর অর্থ হ’ল আপনি যদি সম্প্রতি অন্য কোনও দেশে না যান তবে এটি আপনার উদ্বেগের ৯০% কেটে ফেলা উচিত। আপনি যদি করোনাভাইরাস সাথে যোগাযোগ করেন তবে এটি এখনও আতঙ্কের কারণ নয় কারণ: ৮১% ক্ষেত্রে মিল্ড হয়, মানে স্বাভাবিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে, ১৪% কেস মাঝারি আর কেবলমাত্র ৫% কেসই ক্রিটিকাল যার অর্থ এই যে আপনি ভাইরাসটি পেয়ে গেলেও, আপনি সম্ভবত এটি থেকে সেরে উঠবেন । কেউ কেউ বলেছে, “তবে এটি সার্স এবং সোয়াইন ফ্লু এর চেয়েও খারাপ !” সার্স-এর মৃত্যুর হার ছিল ১০%, সোয়াইন ফ্লু ২৮% এবং কোভিড-১৯ এর মৃত্যুর হার ৬% তদুপরি, যারা এই ভাইরাসে মারা যাচ্ছেন তাদের বয়সের দিকে তাকালে, ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে মানুষের মৃত্যুর হার একেবারেই নগন্য ।
আজ ৩০ মে উদাহরণ হিসাবে ধরা যাক যখন কোভিড-১৯ বিশ্বের ৪০৬ জন জীবন নিয়েছে। আর সুস্থ হয়েছেন ৬,৮৯৩ জন । এদিকে গত ১লা মে একই দিনে: ২,২৮৩ জন ক্যান্সারে মারা গিয়েছিল ২৪,৬৪১ জন লোক হৃদরোগে মারা গেছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪,৩০০ জন, আত্মহত্যা ভাইরাসের চেয়ে ২৮ গুণ বেশি জীবন নিয়েছিল । মশারা প্রতিদিন ২,৭৮০ জন মানুষকে হত্যা করে, মানুষ প্রতিদিন ১,৩০০ জন সহজাত মানুষকে হত্যা করে এবং সাপগুলি প্রতিদিন ১,৩১৩ জনকে হত্যা করে । সুতরাং আমাদের উচিৎ এই ভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানো ও মনে ভয় না ঢুকিয়ে উন্নয়নমূলক চিন্তাভাবনা করা উচিৎ । করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষদের বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করা উচিৎ । কিন্তু হায় ! মানুষ এখন ধরেই নিচ্ছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মৃত্যু নিশ্চিত তাই অন্য রোগীদেরও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে অবহেলা করে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যু কোলে । সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষের পাশে দাঁড়ান । সঠিক পরামর্শ দিয়ে অন্যকে সাহায্য করুন । মনকে শক্ত করুন, আতঙ্কে জড়াবেন না ।