এস এম ওয়াহিদ রনিঃ
চট্টগ্রামের এই সিংহ পুরুষের জন্ম ১১ আগষ্ট ১৮৫২ সালে। চট্টগ্রামের চাঁন্দগাও এলাকায় তার জন্ম হলেও পরবর্তীতে বাকলিয়ায় তিনি জমি কিনে বসবাস শুরু করেন, যেটা বর্তমানে কাজেম আলী মাষ্টার বাড়ী বলে সর্বাগ্রে খ্যাত।
কাজেম আলী মাস্টার হুগলী শহর থেকে এনট্রান্স পাশ করে এসে সাতকানিয়ায় শিক্ষকতা শুরু করেন। শিক্ষার মানোন্নয়নেরর কথা চিন্তা করে চাকমা-রাজ থেকে তাদের ব্যবহৃত ট্যাক্স তোলার ঘাঁটি/জায়গাটি মাত্র ষাট টাকায় কিনে তিনি ১৮৮৫ সালে চিটাগং মডেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। যেটি বতর্মানে কাজেম আলী হাই স্কুল (কাজেম আলী স্কুল এণ্ড কলেজ) নামে পরিচিত। তিনি ১৮৯৩ সাল থেকে আমৃত্যু চট্টগ্রামের পৌরসভার কমিশনার ছিলেন।
১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার সময় এক বিশাল সমাবেশে জনতা তাকে শেখ ই চাঁগাম উপাধিতে সম্মানিত করেন। ১৯১১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের নেতা হিসেবে যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত, ত্রিপুরা চরণ চৌধুরী, স্বামী দীনানন্দ, নৃপেন ব্যানার্জী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে কারাবরন করেন। ঐবছর সাধারণ নির্বাচনে কাজেম আলী মাস্টার কংগ্রেস থেকে ইন্ডিয়া পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হন।
নিঃস্বার্থ জনসেবার জন্য তিনি দুবার সরকারি খেতাব “কায়সার -ই-হিন্দ গোল্ড মেডেল” এবং “সার্টিফিকেট অব অনার” এ ভুষিত হন পরে তা তিনি প্রতিবাদ স্বরূপ সরকারকে ফিরিয়ে দেন।
তিনি ১৯২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সংসদ অধিবেশন চলাকালীন সময়ে জোড়ালো বক্তব্য দেয়াকালীন সময়ে হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে অধিবেশন চলাকালীন সময়ে মারা যান।
দিল্লীর জাতীয় কবরস্থানে তাকে জাতীয় সম্মানের সাথে সমাহিত করা হয় এবং দিল্লীর জাতীয় কবরস্থানে তাঁর স্মৃতিসৌধ শেখ-ই-চাঁটগাম হিসেবে আজীবন অমর হয়ে থাকবে। তাহার পরিধেয় সেই বস্ত্রাদি ও লাঠি দিল্লীর মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে বলে জানা যায়। এটাই চট্টগ্রামবাসী তথা সমগ্র বাংলাদেশীদের গৌরব।