[english_date] | [bangla_day]

চায়ের দেশে ভ্রমণের গল্প

মোহনা জাহ্নবী:  বৃষ্টির মৌসুমে চা বাগানগুলো তার পরিপূর্ণ সৌন্দর্য লাভ করে। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বৃষ্টির সময় সেখানে ভ্রমণের জন্য উত্তম। চারপাশ তখন আরো সবুজ হয়ে ওঠে, বৃষ্টির জলে সবকিছু খুব সজীব ও প্রানবন্ত রূপ ধারণ করে। তাই চায়ের দেশ ভ্রমণের জন্য বৃষ্টির মৌসুমকেই বেছে নিয়েছিলাম। শ্রীমঙ্গলে গিয়েছিলাম চট্টগ্রাম থেকে। উদয়ন এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে সিলেট পর্যন্ত যায়। রাত দশটায় ট্রেন ছেড়েছিল, পৌঁছেছিলাম ভোর পাঁচটায়। পরিচিত একজন এসে আমাকে স্বাগত জানালো।

স্টেশন চত্বর থেকেই চায়ের দেশের চা পান করলাম সবার প্রথমে। তখন নরম আলো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে চারপাশে। স্টেশন থেকে পানসী রেস্টুরেন্টের দূরত্ব খুব বেশি নয়। চা পান করা শেষে আমরা ইঞ্জিনচালিত রিক্সায় চড়ে চলে গেলাম সেখানে। খিচুড়ি আর মাংস দিয়ে সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। খাবারটা বেশ ভালোলেগেছে, দামও ছিল তুলনামূলক কম। হয়তো এজন্যই রেস্টুরেন্টটি এত জনপ্রিয়।

পানসী থেকে আমরা সকালের শীতল আবহাওয়ায় হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম বধ্যভূমি ৭১ এ। সকাল ৮ টার আগে সেখানে প্রবেশ করতে দেয় না, তবুও আমরা অনুরোধ করে প্রবেশ করলাম। এত সুন্দর বধ্যভূমি আগে কখনো দেখিনি। বিজিবির অধীনে বিধায় এত পরিপাটি ও সুন্দর। বৃষ্টিস্নাত পরিবেশে আমরা সেখানে ঘুরে বেড়ালাম। সবুজের সমারোহের ভেতর ছোট একটা সরু নদী বয়ে যাচ্ছে সেখানে। নদীটা ছোট হলেও পানিতে বর্ষার জোয়ার টের পাওয়া যাচ্ছিল বেশ। সেখানে খাবারের দোকান ও মনিপুরি শাড়ির দোকানও আছে। শাড়ির দোকানের ভেতর আরো বাহারি কিছু পণ্য রয়েছে। সব মিলিয়ে দেখার ও সময় কাটানোর জন্য শান্ত সুন্দর একটা জায়গা। বধ্যভূমিতে যারা শায়িত আছেন, তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।

বেশ কতক্ষণ সময় কাটিয়ে আবার আমরা ফিরে আসি পানসি রেস্টুরেন্টে। সেখান থেকে পরিচিত আরো দুজন আমার সাথে যুক্ত হয়। তারপর একজনের বাড়িতে গিয়ে পোশাক বদলে শাড়ি পরে নিই। একটা সিএনজি রিজার্ভ করি। প্রথম গন্তব্য চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, চা জাদুঘর ও লাল পাহাড়। একসময় চা জাদুঘর ও চা গবেষণা ইনস্টিটিউটে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দিত, এখন দেয় না। সেই তথ্য জানা না থাকায় আমরা গেটের কাছ থেকেই ফিরে আসি। লালপাহাড়টা বেশ ভেতরে। সিএনজি মূল রাস্তায় নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক হেঁটে পৌঁছাতে হয় লালপাহাড়ে। আমরা পথ খুঁজে খুঁজে যাচ্ছিলাম। এত নীরব নিঝুম চারপাশ, শুধু চা বাগান আর চা বাগান। অনেকটা পথ গিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, যেহেতু আমরা তিনজন মেয়ে আছি কেবল, আর কেউ সাথে নেই, এমন নিরিবিলি পরিবেশে কোনো বিপদ হলেও হতে পারে। তাই কতকটা দূর থেকে লালপাহাড়কে দেখে আমরা ফেরার পথ ধরি নিরাপত্তার কথা ভেবে।

তারপর আমরা অটোতে করে গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের কাছে চলে আসি। গ্র্যান্ড সুলতানের পাশেই খাবারের হোটেল আছে। সেখান থেকে আরেক দফায় সকালের নাস্তা সেরে নিই পরোটা, সবজি, ডিমভাজি দিয়ে। এরপর সিএনজি নিয়ে চলে যাই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। জনপ্রতি ৫০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে আমরা ভেতরে প্রবেশ করি। সেখানে অনিন্দ্য সুন্দর এক বনাঞ্চলের দেখা পাই। বনের মাঝ দিয়ে ইট বিছানো পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে দেখা মেলে একটা রেলপথের। সেখানে দুটো সিনেমার শ্যুটিং হয়েছিলো, সাইনবোর্ডে সে ব্যপারে লেখা আছে। আরো কিছুক্ষণ সেখানে থেকে আমরা চলে যাই পরবর্তী গন্তব্যে।

আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল মাধবপুর লেক ও রাবার বাগান। শ্রীমঙ্গলে একাধিক রাবার বাগান রয়েছে। মাধবপুর লেকে যাওয়ার পথেই আমরা একটা রাবার বাগানের দেখা পেলাম। সিএনজি থামিয়ে সেখানে অল্প কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত করে মাধবপুর লেকের উদ্দেশ্যে ছুটলাম। মাধবপুর লেকে ঢুকতে কোনো প্রবেশমূল্য নেই, তবে সিএনজি পার্কিং এর জন্য ২০ টাকা দিতে হয়। গেটের কাছে কয়েকটা দোকান আছে। সেখানে মণিপুরি শাড়ি ও বাহারি পণ্য পাওয়া যায়। হাঁটতে হাঁটতে আমরা মাধবপুর লেকে গিয়ে বসলাম। এত অসাধারণ সুন্দর একটা লেক, সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করে দেয়া যায়। চারপাশে পাহাড়, চা বাগান, মাঝখানে লেক, লেকে শাপলা ফোটে। একদম ছবির মতো, কল্পনার মতো ল্যান্ডস্কেপ। আমরা ছোট একটা পাহাড়েও উঠলাম। পাহাড়ের নিচে কয়েকজন চা শ্রমিক দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। আমাকে ডেকে মুখে খাবার তুলে দিলেন পরম স্নেহে। চা পাতা আর চানাচুর দিয়ে তারা এক বিশেষ ভর্তা বানায়, সেই ভর্তা দিয়েই খেলাম কয়েক লোকমা। মাধবপুর লেকের স্মৃতি যতদিন মনে থাকবে, সেই অকৃত্রিম ভালোবাসার কথাও মনে থাকবে।

মাধবপুর লেক থেকে আমরা গেলাম কমলগঞ্জ বর্ডারে। সেখানে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের সমাধি রয়েছে। একপাশে বাংলাদেশ, অন্যপাশে ভারত, চারপাশে চা বাগান ও সবুজ ফসলের ক্ষেত। এত সুন্দর একটা জায়গায় হামিদুর রহমান চিরশায়িত আছেন, দেখে মুগ্ধ হলাম। সমাধির পাশেই একটা ছোট সংগ্রহশালা রয়েছে। সংগ্রহশালাটি বন্ধ ছিল। কর্তৃপক্ষকে বলার পর তারা আন্তরিকভাবে খুলে দিলেন। ভেতরে প্রবেশ করে আমরা দেখতে থাকলাম সবকিছু। চারপাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা থাকার কারণে সেখান থেকে চা বাগান দেখা যায় পরিপূর্ণরূপে, যা সংগ্রহশালাটির সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে।

এরপরের গন্তব্য ছিলো নূরজাহান টি এস্টেট। শ্রীমঙ্গলের সবচেয়ে সুন্দর একটা চা বাগান সেই নূরজাহান টি এস্টেট। ক্যালেন্ডারের পাতায় যেই চা বাগানের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হতাম ছোটবেলায়, বড় হয়ে তা স্বচক্ষে দেখার অনুভূতি যে কী অসাধারণ, বলে বোঝানো যাবে না। শ্রীমঙ্গলে যখন তখন বৃষ্টি হয়। সারাদিনে কয়েকবার আমরা বৃষ্টির কবলে পড়লাম। যখন নূরজাহান টি এস্টেটে গেলাম, তখনো হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি নামলো। সে কী ঝুম বৃষ্টি। আমি সিএনজি থেকে নেমে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকলাম মনের আনন্দে। চারপাশটা অপার্থিব সুন্দর লাগছিলো তখন। ছোট ছোট টিলা জুড়ে চা বাগান, আঁকাবাঁকা পথ, কতক্ষণ পর পর শনের ছাউনি দেয়া দেয়ালবিহীন খোলা ঘর। আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটা বৃষ্টির স্মৃতি জমা হলো সেখানে।

এরপর আমরা শ্রীমঙ্গল সদরে চলে এলাম। সিএনজিকে বিদায় দিলাম। পোশাক বদলে গেলাম লাঞ্চ করতে, ঘোরার আবেশে লাঞ্চ করা হয়নি সময়মতো। লাঞ্চ শেষ করে গেলাম আদি নীলকন্ঠি টি কেবিন এ সাতরঙা চা খেতে। নীলকন্ঠিতেও আছে মণিপুরী শাড়ি ও বাহারি পণ্যের সমাহার, চা ছাড়াও অন্যান্য খাবারও পাওয়া যায়। সাতরঙা চা খেতে ভালোলাগেনি তেমন, তবে না খেলে অপূর্ণতা থেকে যাবে চায়ের দেশ ঘোরার। আর হ্যাঁ, নীলকণ্ঠিতে যাওয়ার পথেই আরো একটা নীলকণ্ঠির দেখা মিলবে, যা পরবর্তীতে তৈরি করা হয়েছে। আমার মতে, আদি নীলকন্ঠি কেবিনে যাওয়াই শ্রেয়। চা খেয়ে সেখানেই আমরা চা বাগানের মাঝ দিয়ে পিঁচঢালা পথে হাঁটলাম কিছুক্ষণ। তখন নীলরঙা সন্ধ্যা নামছে। এক অপূর্ব অনুভূতি হচ্ছিলো। এরপর আবার গেলাম বধ্যভূমি ৭১ এ। সেখানে রাতের দৃশ্যটা আবার অন্যরকম সুন্দর। সেটা দেখার জন্যেই গেলাম। বৃষ্টিভেজা পরিবেশে চা খেতে খেতে আমরা হাঁটলাম, গল্প করলাম। তারপর চলে গেলাম মৌলভীবাজার সদরে। সেখানে পরিচিত একজনের বাসায় থাকার ব্যবস্থা হয়েছে, তাই আর হোটেল বুকিং করিনি। পৌঁছে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম।

এরপরদিন সকালে আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল দেওয়ানছড়া জমিদার বাড়ি। সিএনজি নিয়ে চলে গেলাম সেখানে। সাদামাটা ছিমছাম সুন্দর সবুজ বাড়ি, এরিয়াও মোটামুটি বড়, বাড়ির সামনে ছোট একটা দিঘী আছে। পুরো বাড়িটা সঠিক পরিচর্যার কারণে খুব পরিপাটি হয়ে আছে। আমরা ঘুরে দেখলাম। সাধারণত বাড়ির অন্দরমহলে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেয় না। আমরাও প্রবেশ করতে পারিনি। তাহলে আরো বিশদভাবে দেখার সুযোগ পেতাম।

সেখান থেকে গেলাম বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে। ইকোপার্কটা অনেক বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে, তবু গেট খোলা থাকে বিধায় অল্পবিস্তর মানুষ ঘুরতে যায়। লাউয়াছড়ার মতো সেখানেও সবুজ বনাঞ্চল, অনেকটা এলাকা জুড়ে। একসময় তা জনপ্রিয় ইকোপার্ক ছিল, দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকতো, তার নমুনা মিলবে ইকোপার্কজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন জায়গায়। বেশি নিরিবিলি বিধায় খুব ভেতরে প্রবেশ না করাটাই নিরাপদ। আমরাও বেশি ভেতরে যাইনি। ভ্রমণে সবসময় নিরাপত্তার কথা সবার আগে মাথায় রাখতে হয়।

দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা গেলাম ক্যামেলিয়া লেক দেখতে। সেই যাত্রায় আমাদের সাথে আরো তিনজন যুক্ত হলো। চা বাগান বেষ্টিত ক্যামেলিয়া লেক দেখতে অপূর্ব সুন্দর। ক্যামেলিয়া লেকে যাওয়ার পথেও রয়েছে সৌন্দর্যের ছড়াছড়ি। চারপাশে দারুণ সব ল্যান্ডস্কেপ। বিকেল কাটানোর জন্য ক্যামেলিয়া লেক দারুণ একটা জায়গা।

এরপর গেলাম মনুব্যারেজ। মনুব্যারেজ উল্লেখযোগ্য কোনো জায়গা মনে হয়নি আমার কাছে, তবে সেখানে রোজ বিকেলে অনেক দর্শনার্থী আসে। মনুব্যারেজে কিছুটা সময় কাটিয়ে, সবুজ ঘাসের ওপর বসে খাওয়াদাওয়া করে আমরা চলে যাই রাঙাউটি রিসোর্টে। মনোরম পরিবেশে জলস্থল মিলে খুব সুন্দর একটা রিসোর্ট। ৪০০ টাকা প্রবেশমূল্য। রাত্রিযাপনের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত সুব্যবস্থা। আমরা সুন্দর একটা বিকেল আর সন্ধ্যা কাটালাম সেখানে৷ তারপর চলে এলাম মৌলভীবাজার। সেখানের স্পঞ্জের মিষ্টিটা খেতে সুস্বাদু। মিস করলাম না খেতে। বাসায় গিয়ে রাতের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিলাম।

ওইদিন রাতেই ঢাকা ফেরার জন্য শ্যামলী বাসের টিকিট কেটে রেখেছি। রাত সাড়ে ১২ টায় বাস। প্রচুর বৃষ্টি শুরু হলো, থামার নামগন্ধ নেই। একজন কষ্ট করে বৃষ্টি কিছুটা ঝরার পর পৌঁছে দিলো বাসস্ট্যান্ডে। বৃষ্টির জন্য বাস আসতে একটু দেরি হলো। বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে চা খেতে খেতে বৃষ্টিভেজা চায়ের দেশকে বিদায় জানালাম। বাস ছেড়ে দিলো। মন যেন পড়ে রইলো মৌলভীবাজার কিংবা শ্রীমঙ্গলের অনিন্দ্য সৌন্দর্যের কাছে।

মৌলভীবাজার জেলায় আরো যা যা দেখার আছে
-মাধবকুন্ড জলপ্রপাত (বড়লেখা)
-হাকালুকি হাওর (৫ টি উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত)
-হামহাম জলপ্রপাত (কমলগঞ্জ)
-হাইল হাওর (মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত)
-আতর ও আগর শিল্প বাগান (বড়লেখা)
-চা কন্যা মনুমেন্ট (শ্রীমঙ্গল)
-বাইক্কা বিল (শ্রীমঙ্গল)
-পাখিবাড়ি (বড়লেখা)
-নবাব আলী আমজাদের বাড়ি (পৃথিমপাশা, কুলাউড়া)
-কমলারানীর দিঘী (রাজনগর)
-কালাপাহাড় (কুলাউড়া)
-আদমপুর বন (কমলগঞ্জ)
-মণিপুরী গ্রাম (কমলগঞ্জ)
-পাথারিয়া পাহাড় (বড়লেখা)
-গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট ও গলফ ক্লাব (শ্রীমঙ্গল)
-ঐতিহাসিক গয়ঘর খাজার মসজিদ (সদর)
-পদ্মছড়া লেক (কমলগঞ্জ)
-লাসুবন গিরিখাদ (শ্রীমঙ্গল)
-সীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা (শ্রীমঙ্গল)
-মাথিউড়া চা বাগান লেক (রাজনগর)
-পাঁচগাও বধ্যভূমি (রাজনগর)
-শমসের নগর বিমানঘাঁটি (কুলাউড়া)
-কাদিপুরের শিববাড়ি (কুলাউড়া)
-চাতলগাঁও বধ্যভূমি (কুলাউড়া)
-গগনটিলা (কুলাউড়া)
-শাহবাজপুর বধ্যভূমি (বড়লেখা)
-ব্রিটিশ আয়রন ব্রিজ (জুড়ী)
-ডিনস্টন সিমেট্রি (শ্রীমঙ্গল)
-ইকো রিসোর্ট (শ্রীমঙ্গল)।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়