[english_date] | [bangla_day]

গণপরিবহন চালুর দাবিতে বিক্ষোভের ডাক

চিটাগাং মেইল ডেস্ক:   স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন ও সব ধরনের পণ্য পরিবহন চালুর দাবিতে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ থেকে। শুক্রবার ৩০ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী।

এছাড়া সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করা এবং সারাদেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় ওএমএসের চাল বিক্রির ব্যবস্থা করার দাবিও জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে পরিবহন সেক্টরের জন্য সরকারের তহবিল থেকে থোক বরাদ্দ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। এছাড়া দাবি বাস্তবায়নে ২ মে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল এবং ৪ মে সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওসমান আলী বলেন, প্রতিদিন কয়েক কোটি যাত্রী ও কয়েক কোটি পণ্য পরিবহনের কাজে ৫০ লাখ পরিবহন শ্রমিক দিনরাত কাজ করেন। করোনাকালে যেহেতু পরিবহন শ্রমিকদের সব সময় গণমানুষের সংস্পর্শে থাকতে হয়, তাই পরিবহন শ্রমিকরা যেমন সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন, তেমনি যাত্রীরাও ঝুঁকিতে থাকেন। সেই বিবেচনায় গণপরিবহন বন্ধ রাখা যুক্তি সংগত। তবে সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানের কথাও ভাবা দরকার। জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে জীবিকা প্রয়োজন। তাই মানুষ জীবন বাঁচানোর জন্য জীবিকার অনুসন্ধানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ-বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে সীমাহীনভাবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় জীবন বাঁচানোর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে। আমাদের দেশেও মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে। আমরা লকডাউনের বিরোধিতা করছি না। কথা ছিল লকডাউনের সময় মানুষের চলাচল, শ্রমঘন শিল্প, হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোর্ট-কাচারি ইত্যাদি সব বন্ধ থাকবে। সেই হিসাবে গণপরিবহন বন্ধ থাকলে পরিবহন শ্রমিকদের কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, বাজার, অফিস-আদালত ইত্যাদি শর্ত সাপেক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে চলছে।

অনাহারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে জানিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের এই নেতা বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, যাত্রীরা অটোরিকশা, কার, মাইক্রোবাস, মিনি ট্রাক, মোটরসাইকেলে তিনজন যাত্রী এবং রিকশা-ভ্যান প্রভৃতি যানবাহনে এমনকি নদী পথে স্পিড বোট, ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ধারণ ক্ষমতার তিন-চার গুণ বেশি যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছে। ওইসব যানবাহন যেভাবে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে তা মোটেই নিরাপদ নয়। এই সব যানবাহনে যাত্রী সাধারণ দূর-দূরান্তে চলাচলের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে তাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে এবং নানা হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে বাস ও ট্রাক ব্যতিত সড়ক পথে সব যানবাহন চলছে। এর ফলে সড়ক পরিবহনের অর্ধাহারে-অনাহারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সরকারের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, রমজান মাস প্রায় শেষ দিকে, সামনে ঈদুল ফিতর। কর্মজীবী সড়ক পরিবহনের প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন থাকায় তাদের জীবিকা নির্বাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এ অবস্থায় সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসলে তার দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বহন করবে না। অন্যদিকে গণপরিবহন বিশেষ করে বাস মিনিবাস ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার সুযোগ করে দিলে ছোট ছোট যানবাহনে যাত্রী সাধারণের দূর দূরান্তে কষ্ট করে, স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে চলাচল করতে হবে না। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তি মিলবে এই সেক্টরের শ্রমিকদের। অবসান হবে অসন্তোষের।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদিকুর রহমান, পরিবহন নেতা রহমান হিরু, শহিদুল্লাহ ছদু, মফিজুল হক, হুমায়ুন কবির খান,আব্বাস উদ্দিন খান প্রমুখ।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

পাঠক প্রিয়