চিটাগাং মেইল: সাপ্তাহিক চট্টবাণী পত্রিকার খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি মোঃ আবদুল জলিল’র সত্য প্রকাশে কলম থামিয়ে দিতেই নানা প্রকার হুমকি ও মিথ্যা মামলার পর সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিত ভাবে হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক মোঃ আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ওরা আমাকে মেরে সত্য প্রকাশের কলম থামিয়ে দিতে চায়৷
তিনি আরোও বলেন, ঘুইমারা, মাটিরাঙ্গা ও দীঘিনালায় পরপর দূর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে নিউজ প্রকাশের জের ধরে তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলো সন্ত্রাসীরা।
কিছুদিন পূর্বে দীঘিনালায় অবৈধভাবে পাহাড়কাটা, ইটভাটায় লাকড়ি পোড়ানো, মেরুং খাদ্য গুদামে অনিয়ম, অবৈধভাবে জমির টপসয়েল উত্তোলন সহ বেশ কিছু সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রভাবশালীর চাপ সহ্য করে আসছিলেন তিনি৷
গত ১৩ এপ্রিল দীঘিনালায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল নিয়ে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই সাংবাদিক মোঃ আবদুল জলিল ও তার সহযোগী ফটোগ্রাফার মোঃ ইদ্রিছ আলী’র উপর বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হুমকি আসতে শুরু করে।
এ নিয়ে মোঃ ইদ্রিছ আলী দীঘিনালা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সাধারণ ডায়েরি করার ২ দিন পর মধ্য বোয়ালখালী বাজারের কালাম ফার্মেসীর সামনে স্থানীয় ২ পক্ষের মাঝে মারামারি সংগঠিত হয়।
মারামারি শেষে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সাংবাদিক মোঃ আবদুল জলিল ও তার সহযোগী ফটোগ্রাফার মোঃ ইদ্রিছ আলী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আশেপাশের লোকজনের নিকট ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন৷
কিন্তু এ মারামারির ঘটনায় স্থানীয় এলাকার কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় মোঃ ইদ্রিছ আলীকে ১নং ও মোঃ আবদুল জলিল’কে ৮নং আসামী করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। অবশ্য এ মারামারির সাথে সংশ্লিষ্ট ও আহত মোঃ হাবিবউল্লাহ বলেন, মারামারিতে সাংবাদিক আবদুল জলিল জড়িত ছিলেননা।
কালাম ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী ডাঃ মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাংবাদিক মোঃ আবদুল জলিল’কে এ মামলায় আসামী করা যুক্তিসঙ্গত নয়।
মামলার পরদিন সকালে মোঃ ইদ্রিছ আলীকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। একইদিন সন্ধ্যায় মোঃ আবদুল জলিল’কে পরিকল্পিতভাবে নিজ বাসা থেকে ডেকে নিয়ে মূখ বেঁধে এলোপাতাড়ি মারধর ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরবর্তীতে সাংবাদিক আবদুল জলিল’র চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷
এ ঘটনায় সাংবাদিক আবদুল জলিল’র স্ত্রী বাদী হয়ে দীঘিনালা থানায় অভিযোগ করলে সেটি মামলা হিসেবে এজাহার হয়। মামলা নং- ০৫/২১-০৪-২০২০।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম চন্দ্র দেব জানান, সাংবাদিক আবদুল জলিল’র উপর হামলার বিষয়ে তার স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা এজাহার করা হয়েছে। আসামি আটকের প্রক্রিয়া চলছে।
সাংবাদিক মোঃ আবদুল জলিল’র উপর এরুপ চক্রান্ত ও হামলার বিষয়টি আইনী প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোঃ কাশেম, দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ উল্লাহ, দীঘিনালা উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি মোঃ আবদুর রহমান প্রমূখ।
সংবাদকর্মীদের উপর এরুপ মিথ্যাচার ও অতর্কিত হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, চট্টগ্রাম অনলাইন প্রেস ক্লাব, পার্বত্য প্রেস ক্লাব-খাগড়াছড়ি সহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।